বিশেষ
‘সর্বদা সকলের সময় এক থাকে না’, সাক্ষ্য প্রমাণ অনিল আম্বানি।
নিজস্ব প্রতিনিধি : ‘আজ যে রাজা, কাল সে ফকির’-এটি প্রবাদবাক্য হলেও বাস্তব জীবনেও যে এই প্রবাদবাক্যটির যথেষ্ট প্রাসঙ্গিকতা আছে সেকথা বুঝিয়ে দিয়েছেন অনিল আম্বানি। একসময় বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি ছিলেন, তিনিই কালের নিয়মে আজ দেউলিয়া। সব কোম্পানি বন্ধ। বন্ধ রোজগারের সব রাস্তাও। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে সামান্য উকিলের খরচ মেটাতে তাঁকে নিজের গয়না বিক্রি করতে হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিটেনের এক আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির (মুকেশ আম্বানি) ভাই।
ধীরুভাই আম্বানির মৃত্যুর পর তাঁর বিশাল বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য দুই ছেলের মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। মুকেশ আম্বানির ভাগে এসেছিল, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি এবং পেট্রোকেম। আর অনিল আম্বানি পেয়েছিলেন টেলিকম, ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এবং পরিকাঠামোগত ব্যবসা। ২০০৮ সালে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় মুকেশ আম্বানি ছিলেনপঞ্চম স্থানে এবং অনিল আম্বানি ছিলেন ষষ্ঠ স্থানে। তবে পরবর্তী সময়কাল থেকে অনিল আম্বানির ব্যবসার পতন ঘটতে শুরু করে, আর এখন তিনি প্রায় দেউলিয়া। ব্রিটেনের একটি আদালতে তিনি জানিয়েছেন, তিনি এখন সম্পূর্ণ সাদামাটা জীবন যাপন করেন।
চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক (Chinese banks), চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্সিয়াল ব্যাংক অব চায়না এবং এক্সিম ব্যাংক অব চায়না দাবি করেছে, অনিল আম্বানির সংস্থাকেতারা ঋণ বাবদ কয়েক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এই ঋণগুলি নাকি অনিল আম্বানি নিয়েছিলেন ব্যক্তিগত গ্যারান্টিতে। কিন্তু, ধীরে ধীরে আম্বানির ব্যবসায় ক্ষতি হতে থাকায় এই ব্যাংকগুলির ঋণ তিনি মেটাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ব্যাংকগুলি একই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ভারতের আদালতে অনিলের বিরুদ্ধে মামলা করে।
ব্রিটেনের আদালত আম্বানিকে চিনের তিনটি ব্যাংকের প্রায় ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ঋণ শোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু অনিল আম্বানির আর্থিক অবস্থা এখন শোচনীয়। তাই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলির ঋণ পরিশোধ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। যা শুনে হতবাক হয়ে যায় আদালত।
অনিলকে তাঁর সব সব সম্পত্তির হিসেবে নিকেশের একটা হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। আদালতে অনিল আম্বানি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁর তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও সম্পত্তি নেই। একটিমাত্র গাড়ির মালিক তিনি। এমনকি, জীবনধারণের জন্যও তিনি স্ত্রী-সন্তানের উপর নির্ভরশীল। শুধু তাই নয়, একসময়ের বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি নাকি এখন একজন সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করেন, এমনটাই আদালতে জানিয়েছেন তিনি। আদালতে তিনি বলেন,“আমার জীবনযাত্রা খুব সাধারণ। এখন আমার খরচ স্ত্রী এবং পরিবার বহন করে। এমনকি আমার আইনি খরচও গয়না বিক্রি করে শোধ করেছি।” রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের কর্ণধারের দাবি, তিনি গয়না বেঁচে যে ৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন সেটাও শেষ। এখন আরও খরচ করতে হলে সামান্য যা সম্পত্তি আছে, সেটাও বেচে দিতে হবে তাঁকে।
আকাশ থেকে মাটিতে পড়তে যে বেশি সময় লাগে না, তার প্রমাণ আজ অনিল আম্বানি।
বিশেষ
টিআরপি স্ক্যাম : অর্ণব গোস্বামীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সোশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল!
নিজস্ব প্রতিনিধি : সিএএ, এনআরসি হোক বা সুশান্ত সিং মৃত্যু মামলা, উদ্ধব সরকারের সঙ্গে সংঘাত হোক বা টিআরপি কেলেঙ্কারী, গত বছরেই একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে বারংবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন রিপাবলিক টিভির এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামী।
বলিউড সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার তদন্ত নিয়ে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিতর্কে জড়িয়েছেন রিপাবলিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামী। গত বছর অক্টোবর মাসে টিআরপি তালিকায় দেশে শীর্ষে থাকা এই নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে ভুয়ো টিআরপি রেটিং ব়্যাকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন মুম্বই পুলিশ কমিশানার পরমবীর সিং।
[ আরো পড়ুন : গুগলে ‘chutiya news anchor’ লিখলেই সার্চ রেজাল্টে অর্ণব এর নাম!]
তখন মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছিল, চ্যানেলের রেটিং বাড়ানোর জন্য অনৈতিকভাবে BARC-এর প্রাক্তন CEO পার্থ দাশগুপ্তকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন অর্ণব গোস্বামী। তাও আবার একবার নয়, একাধিকবার বার্ক-প্রধান ‘ঘুষ’ নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
গত ডিসেম্বর মাসে সংশ্লিষ্ট মামলায় এক ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রিপাবলিক টিভির সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে ‘রিমান্ড নোট’ জমা দেয় মুম্বই পুলিশ। যে অভিযোগনামায় দাবি করা হয়েছে যে, নিজস্ব পদমর্যাদার অপব্যবহার করে পার্থ দাশগুপ্ত একাধিক চ্যানেলে টিআরপি এরপর করেছেন।
[ আরো পড়ুন : গুগলে “gujarati actor” লিখলেই সার্চ রেজাল্টে ভেসে আসছে নরেন্দ্র মোদীর ছবি! ]
এবার অর্ণব গোস্বামী এবং বার্কের সিইও পার্থ দাশগুপ্তের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সোশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এ অর্ণব গোস্বামীর কিছু বক্তব্যের স্কিনশর্ট টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। সেই চ্যাটে টিআরপি কেলেঙ্কারি সাথে সম্পর্কিত অর্নবকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সাহায্য চাইতে দেখা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল বা বার্কের সিইও পার্থ দাশগুপ্ত মুম্বাই পুলিশি জেরায় অর্ণবের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ নেওয়ার কথাও কবুল করেছেন। আর সেই টাকা নিয়েই রিপাবলিক টিভির দর্শক সংখ্যা বাড়াতে তিনি কারচুপি করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন পুলিশকে।