ক্রীড়া প্রাঙ্গণ
বক্সিং – ডে টেস্ট এ দুর্দান্ত বাউন্স ব্যাক টিম ইন্ডিয়ার।
বিক্রম দাঁ : বর্ডার গাওয়াস্কার ট্রপির প্রথম পিঙ্ক বল টেস্ট এ ৩৬ রানের আঘাত কাটিয়ে মেলবর্নে দুরন্ত বাউন্স ব্যাক টিম ইন্ডিয়ার। আগের ম্যাচ এ মর্মান্তিক ব্যাটিং কোল্যাপস্ তার ওপর বিরাট কোহলি ও মোহাম্মদ সামির অনুপস্থিতি কিছুটা পিছনে ঠেলে দেবে ভারতীয় দলকে এমন ভাবটা খুব স্বাভাবিক কিন্তু ক্রিকেট যে টিম গেম সেটা আবার প্রমাণিত হলো দ্বিতীয় টেস্ট এর প্রথম ইনিংসে টিম ইন্ডিয়ার পারফরমেন্স দেখে।
প্রথম টেস্ট এ শোচনীয় হারের পর দলে একাধিক পরিবর্তন দেখা যায় টিম ইন্ডিয়ার। অফ ফর্মে থাকা ওপেনার ব্যাটসম্যান পৃথ্বী সাে এর পরিবর্তে ডেবিউ করে শুভমান গিল , সামির চোট এর জন্য তার পরিবর্তে ডেবিউ করে মোহাম্মদ সিরাজ, কোহলির পরিবর্তে আসে অলরাউন্ডার জাদেজা, এছাড়াও ব্যাটিং অর্ডার আর ও পোক্ত করতে সাহার পরিবর্তে দলে ফিরে আসে ঋষভ পান্ট। অন্যদিকে উইনিং কম্বিনেশন এ কোনো পরিবর্তন অনেনি অজিরা।
টস জিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ব্যাটিং করতে আসে। প্রথম দিনের পিচের ওপর কিছুটা ঘাস অবশ্যই ফাস্ট বোলারদের কিছুটা স্বস্তি দেয় । বুমড়াহ আর যাদব তাই দুরন্ত স্পেল দিয়ে শুরু করে বক্সিং ডের প্রথম ইনিংস। জো বার্নস্ কে শূন্য রানেই ঘরে ফেরায় বুমরাহ, এর পর ম্যাথু ওয়েড ও মার্ণস লবুসানে ছোটো একটি পার্টনারশিপ তৈরি করলেও আশ্বিন ঘরে ফেরায় ওয়েডকে ।
এখনে ক্যাপ্টেন রাহানের বোলিং পরিবর্তন প্রসংশনীয়। মাত্র ১১ ওভার এ প্রথম দিনেই স্পিন বোলিং অস্ট্রেলিয়াতে সেভাবে দেখা যায় না। কিন্তু আশ্বিন এর পর অস্ট্রেলিয়ার মেরুদণ্ড ভেঙে দেয় স্টিভ স্মিথ কে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে। এর পর হেড বা কামেরান গ্রিন আর অস্ট্রেলিয়ার হাল ধরে রাখতে পারেনি। টিম ইন্ডিয়ার দুরন্ত বোলিং এর সামনে মাত্র ১৯৫ রানে ঘরে ফিরতে হয় পুরো টিম কে। মোহাম্মদ সিরাজ পুরনো বল এ রিভার সুইং এবং দারুন লাইন লেংথ কন্ট্রোল করে বোলিং করে। ডেবিউ ম্যাচেই তার পরিণত বোলিং এর ঝলক দেখে খুশি এক্স ক্রিকেটাররা।
শেষের ৪০ মিনিটে টিম ইন্ডিয়া ব্যাট করতে এলে স্টার্ক কামিং সকে সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খায় গিল – মায়ানক জুটি। ময়নক কে শূন্য রানে ফিরতে হয়। তবে তার ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে কিছু সমস্যা মাথাচারা দিয়েছে তা স্পষ্ট। এর পর পূজারা ও গিল কিছুটা সামলে উঠলে ইন্ডিয়ার প্রথম দিনে স্কোর হয় ৩৬ রান।
প্রথম দিনের খেলার পর টিম ইন্ডিয়া রয়েছে ডমিনেটিং পজিশনে।
ক্রীড়া প্রাঙ্গণ
মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্টে দুরন্ত জয় রাহানের নেতৃত্বাধীন ভারতের।
বিক্রম দাঁ : অ্যাডিলেড টেস্ট ম্যাচে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে লজ্জার রেকর্ড গড়েছিল ভারতীয় দল। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে ছিলেন না প্রথম দলের চার তারকা। আর মেলবোর্নে ভারতের রেকর্ডও খুব একটা সুখকর ছিল না। কিন্তু এ হেন প্রতিকূলতার মধ্যেই অজিঙ্কে রাহানের ভারত দেখিয়ে দিয়েছে, এভাবেও ফিরে আসা যায়।
বক্সিং ডে টেস্টে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে যেন রূপকথার কাহিনি লিখে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া। তাই এই টেস্ট জয়ের স্বর্ণ পদক তার এই প্রাপ্য। অনবদ্য ঠান্ডা মাথার অধিনায়কত্ব হোক, কিংবা ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, দ্বিতীয় টেস্টে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন আজিংকে রাহানে । তাই এদিন টুইট করে ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলিও রানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
ম্যাচের আগে বিরাট বা সামির অনুপস্থিতি হোক বা খেলা চলাকালীন উমেশ যাদব এর ছোট হাওয়ার পরেও বোলিং ম্যানেজমেন্ট হোক সব দিকেই দারুন প্রতিভার পরিচয় দিয়েছে জিংকস। তবে এই ম্যাচ জেতার পর অধিনায়ক দলের ডেবিউ টান্টস সিরাজ আর শুভমণ এর অসাধারণ পারফরমেন্স এর কথা বলেছেন। আর বলবেননাই বা কেনো? ইশান্ত শর্মা ছিলেন না টেস্ট এ সেই জন্য তৃতীয় সিম বোলার হিসেবে যাদব সুযোগ পায়। তাতেই ভারতীয় দলের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে দুর্বল বলেছিলেন অনেক ক্রিকেটর।
সমি দল থেকে বেরিয়ে গেলে সেখানে সিরাজ এর নতুন ও পুরনো বলে উইকেট নেওয়া র দক্ষতাই দারুন কাজে এসেছে ভারতের। এর পর গিল , আসন্ন দশ বছরে ব্যাটিং এ যে গিল এর রাজত্ব চলতে পারে এমনটা অনেক ক্রিকেটার বলছেন। যেমন টেকনিক তেমন শর্ট সিলেকশন । ভারতীয় ব্যাটিং এর ভবিষ্যত যে বেশ উজ্জ্বল তা বেশ পরিস্কার।
কোহলির নেতৃত্বেই প্রথম ম্যাচে লজ্জার সেই রেকর্ডটি করতে হয়েছে ভারতকে। তারপর আবার পিতৃত্বকালীন ছুটিতে দেশে ফিরে এসেছেন বিরাট। মেলবোর্ন টেস্টের আগে দল ছিল ছত্রভঙ্গ। ৪-০ তে হারের আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছিল দলকে। সেই আশঙ্কাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে মেলবোর্নে জয়ের শিরোপা উঠেছে ভারতের মাথায়। ক্যাপ্টেন কোহলি তাই বলছেন,”কী অসাধারণ জয়! গোটা দলের পারফরম্যান্স অনবদ্য। ছেলেদের জন্য অত্যন্ত খুশি। বিশেষ করে রাহানের জন্য। এর চেয়ে খুশির খবর হতে পারে না। এরপর আমাদের শুধু উপরের দিকে ওঠার পালা।