দেশ
কৃষি আন্দোলনে মৃতের তথ্য দিতে ব্যর্থ কেন্দ্র, মিলবে না ক্ষতিপূরণও!
নিজস্ব প্রতিনিধি : বেশ কিছু মাস ধরে দেশে চলছে কৃষি আন্দোলন। নতুন কৃষি আইন তুলে নেওয়ার দাবিতেই কৃষকদের এই বিরোধ। নানান সময় কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে কৃষকদের আলোচনা সভা হলেও মেলেনি কোন সমাধান। কেন্দ্র বা কৃষক কেওই নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। এই আন্দোলন রুখতে মরিয়া সরকার। কাজের বহু কৃষক নিজেদের প্রাণ ত্যাগ করেছেন এই আন্দোলনে।
কিন্তু দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের কতজন এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন সে বিষয়ে কোন নথি নেই মোদি সরকারের কাছে। গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রক এমনটাই জানিয়েছে। আন্দোলনে যে সমস্ত কৃষক প্রাণ ত্যাগ করেছেন তাদের কৃষকেরা ‘শহিদ’ বললেও কেন্দ্রের কাছে তারা তা নন। কাজেরই মৃতদের পরিবারকে সরকারের তরফে দেওয়া হবে না কোনও রকম ক্ষতিপূরণ।
মূলত গত মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন দিল্লি সীমানায় চলতে তাহলে কৃষি আন্দোলন প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়-সহ ২৯ সাংসদ বেশ কিছু প্রশ্ন করেন। তাদের সেই প্রশ্নের উত্তরেই কেন্দ্রের তরফে এই সমস্ত তথ্য গুলি জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখন অব্দি ১১ দফা কেন্দ্র-কৃষি বৈঠক হয়ে গেলেও কতগুলি কৃষি সংগঠন এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত সেই বিষয়েও তথ্য নেই কেন্দ্র সরকারের কাছে।
দেশ
উত্তরপ্রদেশে ‘দাগী অপরাধী’ কাফিল খান, চলবে আজীবন নজরদারি।
নিজস্ব প্রতিনিধি : চিকিৎসক কাফিল খান যেন উত্তরপ্রদেশ সরকারের চিরশত্রু। এই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগী সরকারের বিরোধ যেন কোন মতেই থামবার নয়। কয়েক মাস আগে কাফিল খানের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার মামলা করে ছিল যোগী সরকার। অবশ্য সেই মামলা খারিজ করে আদালত। তবে তাতে যেন রেহায় পেলেন না ডাক্তারবাবু, উত্তরপ্রদেশ সরকাররের কাছে তিনি আজও ‘অপরাধী’।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার রাজ্যের ‘দাগী অপরাধী’দের এক তালিকা তৈরি করেছে, তাতেই নাম রয়েছে গোরক্ষপুরের এই চিকিৎসকের। যোগী সরকারের নির্দেশে নতুন করে ৮১ জন ‘অপরাধী’কে এক নিয়ে ‘অপরাধী’ তালিকা তৈরি হয়েছে। তালিকার ৮১ জনের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতেই নাম রয়েছে ডাক্তার কাফিল খানের। এই ‘দাগী অপরাধী’র তালিকায় নাম ওঠায় এখন থেকে আজীবন কাফিলের সমস্ত গতিবিধির উপর নজরদারি করতে পারবে যোগী সরকার।
এই ঘটনার পর কাফিল খান নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, “ভালই হল, ২৪ ঘণ্টা দুই জন নিরাপত্তারক্ষী থাকুক আমার সঙ্গে। তাতে অন্তত ভুয়ো মামলা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। বাস্তবে যোগীর প্রদেশ অবাধে আসল অপরাধীরা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। আর সরকারের ‘অপরাধী’ তালিকায় নাম উঠে আসে নিরপরাধী দের।”
উল্লেখযোগ্য, প্রায় তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে গোরক্ষপুর বিআরডি হাসপাতালে একদিনে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ হারাতে হয়েছিল ৬০ শিশুকে। সে সময় সবে ক্ষমতায় এসেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার ৪ মাসের মাথায় এই মর্মান্তিক ঘটায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছিলেন যোগী। সে সময় ওই হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন ডা. কাফিল খান, তড়িঘড়ি তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় পদ থেকে। পরে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল, তবে তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কফিল খান দাবি করেছিলেন প্রশাসনিক দুর্নীতি ঢাকতেই তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন যোগী।
এই ঘটনার পর থেকেই সময়ে সময়ে প্রদেশের যোগী তথা কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন কাফিল খান। CAA এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছেন বহুবার। একাধিক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে CAA’র বিরুদ্ধে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনই এক ভাষণের জেরে তার উপর জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে গ্রেফতার করা হয় তাকে। দীর্ঘ আইনি টানাপড়েনের পর গত সেপ্টেম্বরে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন কাফিল খান।