বিশেষ
‘আমার শরীরের অঙ্গ বেঁচে ঋণ পরিশোধ করা হোক’, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এমনটাই লিখে আত্মহত্যা কৃষকের
নিজস্ব প্রতিনিধি : চলমান কৃষকদের বিক্ষোভের মাঝে মর্মাহত ঘটনার মধ্য দিয়ে মধ্য প্রদেশের এক কৃষক আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে লেখা পাঁচ পৃষ্ঠার একটি নোট উদ্ধার করা হয় মৃতদেহের কাছ থেকে। ‘সরকারের কাছে হস্তান্তর করা উচিত আমার মৃতদেহ যাতে প্রায় ৮৮,০০০ টাকার মোটা বিদ্যুতের বিল উপলব্ধি করতে তার অঙ্গগুলি বিক্রি করা যায়’ এমনটাই লেখা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখন্ড অঞ্চলের ছত্রপুর জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন মৃত কৃষক। নাম মুনেন্দ্র সিং। তিনি আটা কল চালাতেন। কোভিড-১৯ প্ররোচিত লকডাউনের সময় মিলটি বন্ধ হওয়ার কারণে ৮৭,০০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেননি তিনি।
তার আত্মহত্যার একদিন আগে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা বিলের টাকা পুনরুদ্ধার করার জন্য তার মোটরসাইকেল ও আটা কল দখল করে। এবং বাজারের মাঝামাঝি তাকে অপমানও করে।
‘মিল দখলের পরে পাঁচ সদস্যের পরিবারকে খাওয়ানো সম্ভব হচ্ছিল না তার পক্ষে। অপমান ও চাপ সহ্য করতে না পেরে মুনেন্দ্র তার পরিবারকে মৃতদেহ সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে বলে আত্মহত্যা করেছিলেন যাতে তার দেহের অংশ বিক্রি করে ঋণ শোধ করা যায়’, এমনটাই জানিয়েছেন মৃত কৃষকের পরিবারের সদস্য।
“মেরে শরীর সরকার কো দে দে অর শরীর কা অঙ্গ অঙ্গ বেচ কর করজ চুকতা কর লে” (দয়া করে আমার দেহ সরকারকে দিয়ে দিন এবং আমার দেহের অংশ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করুন)। ৪০ বছরের কৃষক সাত পৃষ্ঠার দীর্ঘ আত্মঘাতী নোটে এমনটাই বলে নিজের মাঠের গাছ থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় কর্মরত ভুক্তভোগীর ভাই বলেছিলেন, “আমার ভাই বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার হয়রানির কারণে তার জীবন শেষ করে দিয়েছেন। আমার ভাই অত্যন্ত বিচলিত এবং চাপের মধ্যে ছিলেন যেহেতু তার আটা কল এবং মোটর বাইকটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা দখল করে নিয়েছিল।”
তিনি বলেছেন, “এ বছর ভালো ফসল না হওয়ায় আমার ভাই বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারছিলেন না। আগে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা বিল আসত। তবে হঠাৎ প্রায় ৮৮,০০০ টাকার বিল আসে। বিল পরিশোধের জন্য কোনও সময় না দিয়েই ছত্রপুর জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার আধিকারিকরা আমার ভাইকে আইনী নোটিশ পাঠিয়ে তার আটা কল এবং মোটরবাইকটি জব্দ করে। একটি দল আমার ভাইকে হয়রানি ও চাপ সৃষ্টি করে বাইকটি কেড়ে নিয়েছিল। তিনি বিলটি দেওয়ার জন্য কিছু সময় চেয়েছিলেন কিন্তু কর্মকর্তারা তাঁর আবেদনের কথা শুনতে অস্বীকৃতি জানান।”
কৃষকের ভাই বলেছেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য যারা “দায়বদ্ধ” তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
নোটটিতে লেখা ছিল, “বড় বড় রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের দ্বারা কেলেঙ্কারী হলে সরকারী কর্মীরা কোনও পদক্ষেপ নেন না। যদি তারা ঋণ নেয় তবে তারা এটি পরিশোধ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় বা ঋণ মুকুফ হয়। তবে, যদি কোনও দরিদ্র ব্যক্তি অল্প পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করে, এবং সে সেটি পরিশোধ করতে না পারে, তবে সরকার কখনওই কেন সে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না তা জানতে চাইবে না। পরিবর্তে, জনসমক্ষে তাকে অপমান করা হয়।”
মাতগুভা থানার ওসি কমলজিৎ সিং বলেছিলেন, “আমরা একটি নোট পেয়েছি। মৃতের বাবা ও ভাইরা তাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন বিদ্যুৎ বিল নিয়ে চিন্তা করতে না। যখন তার স্ত্রী তার বাবা-মার বাড়ি থেকে ফিরে আসেন তখন বিলটি নিয়ে তার এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে তর্ক হয়। এরপরেই তিনি কঠোর পদক্ষেপ নেন। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।”
ছত্রপুর জেলার কালেক্টর শীলেন্দ্র সিংহ বলেছিলেন, “মৃতের বাবা পেনশন পান এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী কৃষাণ কল্যাণ যোজনারও সুবিধা পান। তার ভাই বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় চাকরি করেন। প্রশাসন যতটা পারবে সাহায্য করবে। তবে, এই ঘটনাটি তদন্ত করা হবে এবং আত্মহত্যার জন্য যদি কাউকে দোষী হিসাবে পাওয়া যায় তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশেষ
টিআরপি স্ক্যাম : অর্ণব গোস্বামীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সোশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল!
নিজস্ব প্রতিনিধি : সিএএ, এনআরসি হোক বা সুশান্ত সিং মৃত্যু মামলা, উদ্ধব সরকারের সঙ্গে সংঘাত হোক বা টিআরপি কেলেঙ্কারী, গত বছরেই একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে বারংবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন রিপাবলিক টিভির এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামী।
বলিউড সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার তদন্ত নিয়ে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিতর্কে জড়িয়েছেন রিপাবলিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামী। গত বছর অক্টোবর মাসে টিআরপি তালিকায় দেশে শীর্ষে থাকা এই নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে ভুয়ো টিআরপি রেটিং ব়্যাকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন মুম্বই পুলিশ কমিশানার পরমবীর সিং।
[ আরো পড়ুন : গুগলে ‘chutiya news anchor’ লিখলেই সার্চ রেজাল্টে অর্ণব এর নাম!]
তখন মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছিল, চ্যানেলের রেটিং বাড়ানোর জন্য অনৈতিকভাবে BARC-এর প্রাক্তন CEO পার্থ দাশগুপ্তকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন অর্ণব গোস্বামী। তাও আবার একবার নয়, একাধিকবার বার্ক-প্রধান ‘ঘুষ’ নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
গত ডিসেম্বর মাসে সংশ্লিষ্ট মামলায় এক ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রিপাবলিক টিভির সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে ‘রিমান্ড নোট’ জমা দেয় মুম্বই পুলিশ। যে অভিযোগনামায় দাবি করা হয়েছে যে, নিজস্ব পদমর্যাদার অপব্যবহার করে পার্থ দাশগুপ্ত একাধিক চ্যানেলে টিআরপি এরপর করেছেন।
[ আরো পড়ুন : গুগলে “gujarati actor” লিখলেই সার্চ রেজাল্টে ভেসে আসছে নরেন্দ্র মোদীর ছবি! ]
এবার অর্ণব গোস্বামী এবং বার্কের সিইও পার্থ দাশগুপ্তের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সোশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এ অর্ণব গোস্বামীর কিছু বক্তব্যের স্কিনশর্ট টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। সেই চ্যাটে টিআরপি কেলেঙ্কারি সাথে সম্পর্কিত অর্নবকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সাহায্য চাইতে দেখা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল বা বার্কের সিইও পার্থ দাশগুপ্ত মুম্বাই পুলিশি জেরায় অর্ণবের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ নেওয়ার কথাও কবুল করেছেন। আর সেই টাকা নিয়েই রিপাবলিক টিভির দর্শক সংখ্যা বাড়াতে তিনি কারচুপি করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন পুলিশকে।