রাজ্য
‘মোদি জিকে একটা সুযোগ দিন, পাঁচ বছরেই সোনার বাংলা গড়বে বিজেপি’ দাবি অমিত শাহের
নিজস্ব প্রতিনিধি: উৎসবের মরশুম শেষে শুরু হবে ভোট প্রচার। কুড়ি কুড়ি-র শেষ, কুড়ি একুশে বাংলায় বিধানসভা ভোট। কিছুদিন পর থেকেই বিজেপি শুরু করবে তার ভোট প্রচার। শুক্রবার সাংগঠনিক বৈঠক থেকে তার দিকনির্দেশ করে দিলেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
বিহার ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে বারবার শোনা গেছে ৩৭০ ধারা থেকে রামমন্দির এর প্রসঙ্গ। কোনও রক্তপাত ছাড়া কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। রামমন্দির তৈরির রাস্তাও পরিষ্কার হয়েছে। এবার সিএএ নিয়ে পুনরায় পথ চলা শুরু করতে হবে।
সিএএ–এনআরসি নিয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। বিরোধীতা করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই নিয়েই অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‘সিএএ আইন দ্রুত প্রয়োগ হবে। করোনার পরিস্থিতি দেখে নিয়ে আইন প্রয়োগ করা হবে। ’’ কিছুদিন পর থেকেই ফের সিএএ নিয়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিলেন অমিত শাহ। তিনি এটাও স্পষ্ট করেন যে বিজেপি যা প্রতিশ্রুতি দেয়, সেটা পূরণ করে।
বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে বুথভিত্তিক কর্মসূচির ওপর জোর দিয়েছেন অমিত শাহ। সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে, সাংগঠনিক বৈঠকে তিনি বলেন, বুথগুলোতে জোর দিতে হবে। বিজেপির বিভিন্ন মোর্চার তরফে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মসূচি নিতে হবে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন ব্লকের কর্মসূচির উপর নজর রাখা হবে। লোকসভা ভোটের পর জনসংযোগের লক্ষ্যে তৃণমূল নেতাদের গ্রামে গিয়ে রাত্রিবাসের নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রানুসারে, বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি-কর্মসূচি হিসেবে অমিত শাহও একই পথে চলেছেন, তিনি নেতাদের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে রাত্রিবাস করার কথা বলেছেন।
শুধু তাই নয়, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূলের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য শুধু ভাইপোকে সুবিধা করে দেওয়া। ভোটব্যাঙ্কের জন্য আলাদা আইন আর জনগণের জন্যে আলাদা আইন করেছেন তিনি। কৌশলে প্রশাসনের রাজনৈতিকরণ করেছেন, রাজনীতিকে নষ্ট ও দুর্নীতিযুক্ত করে দিয়েছেন। সাইক্লোন আমফান ও করোনাতেও দুর্নীতি করেছেন। ভাইপোর জন্যে আলাদা আইন চলে এখানে। আমি বিজেপি শাসিত রাজ্যে এমন কোনো নির্দিষ্টকরণ লক্ষ্য করা যাবে না।”
দলকে শক্তিশালী করতে অন্য দল থেকে দক্ষ সংগঠকদের জন্য দরজা খুলে রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্রের দাবি, তিনি বলেন,’ সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল থেকে যারা আসতে চায়, ভোট বোঝে, আনতে হবে। বাঁকুড়ার সাংগঠনিক বৈঠকে অমিত শাহ দাবি করেন, গত লোকসভা ভোটে সিপিএমের অনেকে বিজেপিতে যোগ না দিয়েও, আমাদের সাহায্য করেছেন। এবার তাদের দলে টানার চেষ্টা করতে হবে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে কড়া জবাব দিয়েছে সিপিএম’।
তবে অমিত শাহের বক্তব্যকে কটাক্ষ করে শোভনদেব বলেন, ‘যোগদান কেউ করবে না। বিজেপি ছেড়ে লোকে চলে আসছে। উনি আশা করতেই পারেন। কিন্তু তা পূরণ হবে না।’ অমিত শাহ এদিন আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কে হবে, কে বিজেপিতে আসবেন- সেসব ভাবনা ছেড়ে আপনারা ভাবুন, সোনার বাংলা কী ভাবে গড়া যায়। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে শুক্রবার বলেন, সোনার বাংলা যেমন গড়তে হবে, শক্তিশালী ভারতও গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সেই লড়াই চলবে। তার জন্যই বাংলায় পরিবর্তন আনা জরুরি। মোদিকে একটা সুযোগ দিন, পাঁচ বছরেই সোনার বাংলা গড়বে বিজেপি’।
করোনা কালে কীভাবে হবে ভোট প্রচার? স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে নাকি উলঙ্ঘিত হবে বিধি। লড়াই শেষে ২০২১- এ কে গড়বে সরকার? বছর ঘোরার সাথে সাথে সরকারও কী ঘুরে যাবে? এরকম একাধিক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
রাজ্য
চিটফান্ড-কাণ্ডে এবার পিসি সরকার জুনিয়রের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি!
নিজস্ব প্রতিনিধি : শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা হাজির হলেন পিসি সরকার জুনিয়রের মুকুন্দপুরের বাড়িতে। তল্লাশি চালানোর জন্যেই তাদের ওই বাড়িতে যাওয়া। তবে কী কারণে এই তল্লাশি অভিযান, তা অবশ্য সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়নি। মুখে কুলুপ এটেছেন পিসি সরকারের পরিবারের সদস্যরাও।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চিটফান্ড-কাণ্ডের তদন্তে ৪টি জায়গায় তল্লাশি চলছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই ৪টি বাড়ির মধ্যে একটি হল জুনিয়র পিসি সরকারের বাড়ি।
একটি রেস্তরাঁ নিয়ে টাওয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে জুনিয়র পিসি সরকারের ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির সময় তিনি টাওয়ার গোষ্ঠী থেকে টাকাও নিয়েছিলেন। রেস্তরাঁ নিয়ে টাওয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে যে চুক্তি, তার বাইরে অন্য কোনও ভাবে টাকা লেনদেন হয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার মুকুন্দপুরের পূর্বালোকের বাড়িতে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। টাওয়ার গ্রুপের সঙ্গে কী ভাবে তার চুক্তি হয়েছিল, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।