দেশ
বাড়ছে আন্দোলন জোর, দিল্লি আসা যাওয়া সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ভাবনা কৃষকদের।
নিজস্ব প্রতিনিধি : দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে রাজধানী অবরুদ্ধ করার পরিকল্পনা। প্রশাসনের তরফে আন্দোলনকারীদের দিল্লির বুরারি নিরঙ্কারি ময়দানে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা চান, রামলীলা ময়দান অথবা যন্তর মন্তরে সমাবেশ করে তাদের আন্দোলনের জোর আরও বাড়াবার। আন্দোলনরত কৃষকেরা গত শুক্রবার দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় সিঙ্ঘুতে জড়ো হন। বৃহস্পতিবার থেকেই কৃষকদের “দিল্লি চলো” অভিযান রুখতে মরিয়া হরিয়ানা সরকার। তাঁদের আটকাতে ব্যারিকেড, জল কামান, কাঁদানে গ্যাস, বাদ যায়নি কিছুই। শেষপর্যন্ত আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র।
আন্দোলন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। তিনি ৩ ডিসেম্বর কৃষকদের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসার বার্তা দিয়েছেন। এর আগে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত কৃষকদের গ্রেফতার করে অস্থায়ীভাবে রাখার জন্য ৯টি স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়। তবে দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন সেই অনুমতি দেননি। দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে বিক্ষোভরত কৃষকদের জন্য পানীয় জল, খাবার, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আম আদমি পার্টির বিধায়ক রাঘব চাড্ডাকে বুরারির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গিয়েছেন বলে আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শনিবার সকালে বুরারির নিরঙ্কারি ময়দানে গিয়ে পুরসভার কর্মীরা জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা গেছে।
এদিকে, উত্তরপ্রদেশের মেরঠে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত জানিয়েছেন, ‘সরকার কৃষকদের সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন দিল্লির দিকে এগোচ্ছি।’ অন্যদিকে, কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, এবার আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিতে পরে সরকার। তবে তিনি হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
ট্যুইটে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘কেন্দ্রীয় সরকার এখন কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মনোহরলাল খট্টার সরকার কৃষকদের শান্তিপূর্ণভাবে দেশের রাজধানীতে যাওয়া ঠেকানোর জন্য বর্বরোচিত শক্তিপ্রয়োগ করছে। এই ধরনের কঠোর পন্থা নেওয়ার প্রয়োজন কী? এখনই এই বর্বরতা বন্ধ করা দরকার খট্টারজি।’ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দ্র সিংহ হুডাও পুলিশের আচরণের নিন্দা করেছেন।
দেশ
কৃষি আন্দোলনে মৃতের তথ্য দিতে ব্যর্থ কেন্দ্র, মিলবে না ক্ষতিপূরণও!
নিজস্ব প্রতিনিধি : বেশ কিছু মাস ধরে দেশে চলছে কৃষি আন্দোলন। নতুন কৃষি আইন তুলে নেওয়ার দাবিতেই কৃষকদের এই বিরোধ। নানান সময় কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে কৃষকদের আলোচনা সভা হলেও মেলেনি কোন সমাধান। কেন্দ্র বা কৃষক কেওই নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। এই আন্দোলন রুখতে মরিয়া সরকার। কাজের বহু কৃষক নিজেদের প্রাণ ত্যাগ করেছেন এই আন্দোলনে।
কিন্তু দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের কতজন এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন সে বিষয়ে কোন নথি নেই মোদি সরকারের কাছে। গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রক এমনটাই জানিয়েছে। আন্দোলনে যে সমস্ত কৃষক প্রাণ ত্যাগ করেছেন তাদের কৃষকেরা ‘শহিদ’ বললেও কেন্দ্রের কাছে তারা তা নন। কাজেরই মৃতদের পরিবারকে সরকারের তরফে দেওয়া হবে না কোনও রকম ক্ষতিপূরণ।
মূলত গত মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন দিল্লি সীমানায় চলতে তাহলে কৃষি আন্দোলন প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়-সহ ২৯ সাংসদ বেশ কিছু প্রশ্ন করেন। তাদের সেই প্রশ্নের উত্তরেই কেন্দ্রের তরফে এই সমস্ত তথ্য গুলি জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখন অব্দি ১১ দফা কেন্দ্র-কৃষি বৈঠক হয়ে গেলেও কতগুলি কৃষি সংগঠন এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত সেই বিষয়েও তথ্য নেই কেন্দ্র সরকারের কাছে।