দেশ
জলকামান বন্ধ করার অপরাধে, প্রতিবাদী কৃষক নেতার ছেলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা!
নিজস্ব প্রতিনিধি : দিল্লিতে কৃষক প্রতিবাদ ঘিরে চরম উত্তেজনা। আন্দোলনের সময় কৃষকদের থামাতে ব্যবহার করা হচ্ছিল জলকামান। কিন্তু চোখের পলকে জলকামানে উঠে সেটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন এক প্রতিবাদী যুবক। বিক্ষোভের মাঝে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় ওই প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোভিড-১৯ গাইডলাইন ভাঙা ও দাঙ্গার কারণে যার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন পর্যন্ত হতে পারে যুবকের।
প্রতিবাদীর নাম নবদীপ সিং। কৃষক সংগঠনের নেতা জয় সিংয়ের ছেলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা যায়, প্রবল উত্তেজনার মাঝে নবদীপ একটি নীল রঙের জলকামানে তরতর করে উঠে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে জলকামনটি বন্ধ করে, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাক্টরে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ওই জলকামানটি থেকে সেসময় আন্দোলনরত কৃষকদের দিকে তাক করে জল ছোড়া হচ্ছিল। নবদীপ মনে করেন, তিনি কোনও বেআইনি কাজ করেননি বা তাতে প্ররোচনা দেননি। এই ঠান্ডায় জলকামানের জলে আন্দোলনরত কৃষকদের কষ্ট হচ্ছিল। তাই কৃষকদের রক্ষা করতেই তিনি জলকামানে উঠে কলের মুখটি বন্ধ করে দেন।
কৃষক সংগঠন নেতার ছেলে নবদীপ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “জনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সবরকমের অধিকার আমাদের রয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভাবেই আমাদের প্রতিবাদ চলছিল। আমরা দিল্লিতে ঢুকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, ব্যারিকেড করে, কাঁটাতার ফেলে রাস্তা আটকে দেয়। সরকার যদি জনবিরোধী আইন পাস করে, সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলার সবরকম অধিকার আমাদের রয়েছে।”
উল্লেখ্য, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামানকে উপেক্ষা করে কৃষকেরা তাদের আন্দোলনে অনড় থেকেছেন। একাধিক বার ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানী অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টাও করেছেন। কৃষক সংগঠনগুলোর বক্তব্য, কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
কৃষকদের অনড় মনোভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেয়। তবে, নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে দেওয়া হয়নি। বুরারির নিরঙ্কারী ময়দানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভে শামিল আরও এক কৃষকের কথায়, ‘কোভিড-১৯ গাইডলাইনের কথা বলে পুলিশ আমাদের প্রতিহত করতে চেয়েছিল। কিন্তু, আমরা সমস্তরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েই দিল্লি অভিযানে শামিল হয়েছি। কেন্দ্রীয় আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।’
দেশ
কৃষি আন্দোলনে মৃতের তথ্য দিতে ব্যর্থ কেন্দ্র, মিলবে না ক্ষতিপূরণও!
নিজস্ব প্রতিনিধি : বেশ কিছু মাস ধরে দেশে চলছে কৃষি আন্দোলন। নতুন কৃষি আইন তুলে নেওয়ার দাবিতেই কৃষকদের এই বিরোধ। নানান সময় কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে কৃষকদের আলোচনা সভা হলেও মেলেনি কোন সমাধান। কেন্দ্র বা কৃষক কেওই নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। এই আন্দোলন রুখতে মরিয়া সরকার। কাজের বহু কৃষক নিজেদের প্রাণ ত্যাগ করেছেন এই আন্দোলনে।
কিন্তু দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের কতজন এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন সে বিষয়ে কোন নথি নেই মোদি সরকারের কাছে। গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রক এমনটাই জানিয়েছে। আন্দোলনে যে সমস্ত কৃষক প্রাণ ত্যাগ করেছেন তাদের কৃষকেরা ‘শহিদ’ বললেও কেন্দ্রের কাছে তারা তা নন। কাজেরই মৃতদের পরিবারকে সরকারের তরফে দেওয়া হবে না কোনও রকম ক্ষতিপূরণ।
মূলত গত মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন দিল্লি সীমানায় চলতে তাহলে কৃষি আন্দোলন প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়-সহ ২৯ সাংসদ বেশ কিছু প্রশ্ন করেন। তাদের সেই প্রশ্নের উত্তরেই কেন্দ্রের তরফে এই সমস্ত তথ্য গুলি জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখন অব্দি ১১ দফা কেন্দ্র-কৃষি বৈঠক হয়ে গেলেও কতগুলি কৃষি সংগঠন এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত সেই বিষয়েও তথ্য নেই কেন্দ্র সরকারের কাছে।