Connect with us

রিভিউ

মুভি রিভিউ: ইব অ্যালে উ

Published

on

সৌমেনন্দু বাগ : “রাইসিনা হিলসে বাঁদরদের রাজত্ব! বুঝলে?” এই বক্তব্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সিনেমা। না সিনেমা নয়, বলা ভালো রাজনৈতিক সটায়ার যেখানে দেশের স্বর্গতুল্য শহরের বুকের ভিতর কিভাবে দগদগে ক্ষত জমে থাকে তারই ছবি আঁকা হয়েছে। প্রতীক বৎসের প্রথম ফিচার ফিল্ম এটি, লকডাউন এর দরুন হলে মুক্তির সুযোগ হইনি কিন্তু গত বছরের মুম্বাই ফিল্ম ফেস্টিভালে নির্বাচিত ছবিটি ইউটিউবে চলা ‘ উই আর ওয়ান’ ফিল্ম ফেস্টভ্যালে গত শুক্রবার প্রিমিয়ার হয়ে গেলো, স্বাভাবিকভাবেই ‘ব্যস্ত’ মানুষের এসব দেখার সময় নেই, হয়না। যাক গে, ছবি তে আসা যাক… অঞ্জনি রাইসিনা হিলসে কাজ করে, বাঁদর তাড়ানোর কাজ, আজ্ঞেহ্যাঁ, ভারতে এইরকম কাজ ও আছে( আর নিন্দুকেরা বলবে, দেশে কাজ নেই)! রাজপথ ও তার আশেপাশের বিল্ডিং থেকে বাঁদর দের তাড়িয়ে রাখতে হবে কিন্তু তাদের কোনো ক্ষতি করলে হবে না, কারণ তারা তো আবার আমাদের ‘ ভগবান ‘। কিন্তু অঞ্জনী সে কাজে অক্ষম, এই ‘ ইব আলে উ ‘ ধ্বনি ই তাদের তাড়ানোর মন্ত্র। নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে এই আওয়াজ বের করে তাদের তাড়াতে হয়, যে কাজ সাত পুরুষ ধরে করে আসছে মহিন্দর এর মত লোকেরা। আবার অঞ্জনি অন্য কোনো কাজ ও সেভাবে জানে না। এইরকম ই এক অসহায় যুবকের গল্প ট্র্যাজেডি – কমেডির মোরকে পেশ করা হয়েছে।

ছবিটা আসলে এক বাস্তব বলে যেখানে দুর গ্রাম থেকে একটু বেশি টাকা রোজগারের জন্য মানুষ শহরে ভিড় করে, তাদের শহরের সাথে লড়াই করতে হয়, শহরের ব্যবস্থার সাথে লড়াই করতে হয়। সেই ব্যবস্থা যেখানে দেশের পতাকা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য মানুষের পিঠে চাপতে হয়। ব্যুরক্রাট থেকে কন্ট্রাক্টর থেকে মজুর.. তারপর? তারা কাকে বলবে যে তাদেরও অসুবিধে হচ্ছে, তারাও মাইনে পায় না। নিজদের কাজ ঠিকমতো করতে গেলেও চোখ রাঙানি দেখতে হয়। এই দেশের তাদের জন্য ভাবার সময় নেই ‘ রাষ্ট্র বাদ ‘ এ ভরিয়ে তুলতে হবে বুক, সোনার পাখির এই দেশে কাতারে কাতারে মানুষ রাজপথে আসে কুচ কাওয়াজ দেখতে, আকাশে জেট প্লেন দেখে কেউ মুগ্ধ হয়, কেও শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকে। বাঁদর ধরার খাঁচায় যেভাবে বাঁদর কে লোভ দেখিয়ে বন্দী করা হয়, দেশের এই পরিযায়ী দের ঠিক এক অবস্থা। এই খাঁচা চলে সহানুভূতি আর চকমকি পাথরের লোভ দেখিয়ে। আমরা সব জানি, আমরা সবকিছু দেখতে পাই, সমস্ত ‘ শ্রেণী – সচেতনতার ‘ ভিতর কতটা ‘ শ্রেণী – শোষণ ‘ রয়েছে তাও বুঝি, কিন্তু সেসব ভাবার অবকাশ কোথায়! এই সিনেমা এই গল্প টুকুই বলে।ছবির রিভিউ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি সিনেমাটোগ্রাফির কথা না বলি, সৌম্যানন্দা সাহির ক্যামেরায় দিল্লিকে দেখবেন একজন সাধারণ দেশবাসী হিসেবে। বিশেষ করে বলতে হয় বাঁদরদের কথা; তাদের ক্লোজ এক্সপ্রেশন , মুভমেন্ট গুলো এত নিখুঁত ভাবে তুলেছেন তিনি, অসাধারণ ছাড়া কোনো ব্যাখ্যা হবে না। আর কিছু ট্রেনের দৃশ্য আছে, সেগুলোও কতটা উপমার কাজ করে তা ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন। আর তারপর আসে ক্লাইম্যাক্স… ক্যামেরাওয়ার্ক , অঞ্জনির চরিত্রে শার্দুল ভরদ্বাজের অভীনয় , গল্প সবকিছুই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায়। নাড়িয়ে দিয়ে যায় শেষ দৃশ্যগুলো।[ আরও পড়ুন – সত্যজিৎ রায় হয়ে ওঠার আগে… ]যাই হোক, ধন্যবাদ অনুরাগ কাশ্যপ কে এরকম কাজ দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আর আপনার ও চেষ্টা করুন তারাতারি ছবি টা দেখে নিতে, কারণ ৩১ শে মে বিকেল সাড়ে চারটে অবধি ইউটিউবে রয়েছে, তারপর আর কোথায় থাকবে জানা নেই। না হলে আর কি, আমাদের তো এমনিতেই ‘ টপিক ‘ এর অভাব নেই।

রিভিউ

মন্ত্রমুগ্ধ সঙ্গীতের এই বান্দিশ। ওয়েব সিরিজ রিভিউ : বান্ডিশ বান্ডিত্স

Published

on

বিপাশা দাস : পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম জীব হলো গিয়ে মানব। শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকার গুণের ও অংশীদার তারা। সঙ্গীত যার মধ্যে একটি, লক্ষ্য করে দেখবেন নিত্যদিনের প্রত্যেকটি কর্মের মধ্যে আপনি সুরের আশ্চর্য মেলবন্ধন খুঁজে পাবেন। এই আশ্চর্য মেলবন্ধন কে কাজে লাগিয়ে পরিচালক অঙ্কিত তিওয়ারি বান্ডিশ বান্ডিত্স নামক একটি ওয়েব সিরিজ আমাজন প্রাইম এরপর্দায় নিয়ে এলেন।

গুরুর প্রতি শিষ্যের অপার ভক্তি, সঙ্গীতের প্রতি অনবদ্য প্রেম একজন নিষ্ঠাবান শিষ্যের পরিচয়। পুরাকালের কাহিনী তো সবার কাছে জ্ঞাত, গুরুদেব দ্রোণাচার্য একলব্য এর আঙ্গুল গুরুদক্ষিণা হিবেসে চেয়ে গুরুভক্তির নিদর্শন স্বরূপ অক্ষত রাখেন। তেমনি এই ছবিতে রাধে তার টাকুরদা পণ্ডিত রাধেমোহনকে নিজের গুরুভক্তি এবং প্রেমের নিদর্শন কঠোর পরিশ্রমের সাথে দিয়েছে।

এবার যদি সঙ্গীতের ব্যাখ্যা চান তাহলে বলবো যথাযথ তার কোনো ব্যাখ্যা হয় না। ইতিহাসের দিকে নজর দিলে বুঝতে পারবেন সঙ্গীতের মহিমা কতটা ব্যাপ্ত। আকবরের নবরত্ন অলংকৃত তানসেন নিজের সঙ্গীতেরদ্বারা বৃষ্টি নামাতে পারতেন, ক্ষিপ্ত হাতিকে শান্ত করার ক্ষমতা ও তার গানের দ্বারা ফুটে ওঠে। তবে এই ওয়েব সিরিজের শেষে এমনটাই পরিচয় পেয়ে থাকবেন। ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল গানের সঙ্গেপপ মিউজিক এর অসাধারণ যুগলবন্দি সত্যিই তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। সাথে রাজস্থানের সাংস্কৃতিক প্রতিপত্তি,রাজার উপস্থিতি সবকিছুই যেনো ইতিহাসকে চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট। আমাদের ভারতবর্ষে ফোক গানের কদর এক আলাদা স্তরেই বিদ্যমান, এত সুন্দর ভাবে তার পরিবেশন সাথে বিভিন্ন অসাধারণ কিছু রাগের উপস্থিতি ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের প্রেমে পড়ার জন্য যথেষ্ট।

অতুল কুলকর্ণী, নাসিরউদ্দিন সাহ, তৃধা চৌধুরী, শিবা চড্ডা দের মত নামকরা কিছু তারকাদের উপস্থিতি দেখা গেছে। সবার তাক লাগিয়ে দেওয়া অভিনয় এর পরিচয় আমরা আগেও পেয়েছি এই ওয়েব সিরিজেওবেশ সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কিন্তু ঋত্বিক ভৌমিক (রাধে) এবং শ্রেয়া চৌধুরী (তামান্না) র অসাধারণ অভিনয় সত্যিই প্রশংসনীয়। লিড রোল রাধের পুরো ওয়েব সিরিজ টিকে এক আলাদা জায়গায় স্থান দিয়েছে সাথে তার বন্ধু কবীরের কিছু হাস্যকর মুহূর্তও এবং অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষী এই সিরিজটি।

ডিরেকশনে র কথা বললে রাজেস্থানের যোধপুর নামক এই শহরটির সৌন্দর্য্য কে নব বধূর সাজের সাথে মিলিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে যা এককথায় অতুলনীয়। কিন্তু কোথাও গিয়ে কিছু খামতি চোখে ধরা পড়েই। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের প্রকাশ থাকলেও অত্যধিক পরিমাণে অকথ্য ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে যার ফলে পরিবারের সঙ্গে বসে দেখার কোনো সুযোগই নেই। সিরিজটির শেষের দিকে পপ এবং ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের ছোয়া তো দূর নায়িকার উপস্থিতিই সরিয়ে দেওয়া হয়। লেখার ক্ষেত্রে এসব খামতি এড়িয়ে যাওয়া দায়।

শ্রীরাম গণপথী র চলচ্চিত্রশিল্প সত্যিই খুবই সুন্দর ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এডিটিং এ লিড রোল রাধে র মাস্কড ম্যান এর থিওরী এবং তার উপস্থাপনা কে দুর্বল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষে মনমাতানো গানের যুগলবন্দী টি সত্যিই অবিস্মরণীয়। সেটা যদি নাই দেখলেন তাহলে কি দেখলেন প্রশ্ন করতে হয়। সঙ্গীত জগতের তিন অনবদ্য সৃষ্টিকর্তা কর্তা সংকর মহাদেভান, এহসান এবং লয়ের হাত ধরেই এই সিরিজের যে উত্থান। তাদের গাওয়া প্রত্যেকটি রাগের মধ্যে যে আলাদাই আবেগ, অনুভূতি,বেদনা,বিরহ,প্রেমের স্পর্ধা প্রকাশ পেয়েছে যা সত্যিই না শুনে বোঝা সাধ্যের বাইরে।

Continue Reading
Advertisement
Advertisement
Advertisement e

আমাদের ফেসবুকে পেজ লাইক করুন

Advertisement
Advertisement

জনপ্রিয় পোস্ট