Connect with us

রুকস্যাক

বাদাবনের আতঙ্ক।

Published

on

Social Update Bengali News Image
Image Credit Ananda Banerjee

আনন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় : গভীর বন। পাহাড়ি বনের মতো জংলা নয়। পরিষ্কার ঝক্‌ঝকে বন। নোনা মাটিতে আগাছা বেশি জন্মাতে দেয় না। আবার পাহাড়ি জঙ্গলের মতো গুরু-গম্ভীরও নয়। চারিদিকে নদীনালা বেয়ে স্রোতের ধারা তর্‌তর্‌ করে অনবরতই ছুটে চলেছে– কখনও বা জোয়ারের টানে, কখনও বা ভাটির টানে। বড় জীবন্ত এই বন– সুন্দরবন।   অগুন্‌তি নদীনালা। বড় নদী ছেড়ে ছোট নদীতে পড়া যায়। আবার ছোট নদী ছেড়ে খালে পড়া যায়। তারপরও খাল ছেড়ে শিষে ধরে বনের গভীরতম স্থানে ডিঙ্গি হাজির হয়। শিষেগুলো খুবই সরু। মাত্র সাত-আট হাত চওড়া। জোয়ারের সময় কানায় কানায় জলে ভরে ওঠে, আবার ভাটির সময় ক্ষীণধারা নরম পলিমাটির পর ঝিরঝির করে বয়ে যায়। পূর্ব-সুন্দরবনের চিরাচরিত পথ ছেড়ে আমরা চলেছি পশ্চিম-সুন্দরবনের পথে। লোথিয়ান, ভগবতপুর পেড়িয়ে আমদের নৌকা চলেছে আরও পশ্চিমে। নদীর বুকে গজিয়ে ওঠা ছোট-ছোট দ্বীপ, কোথাও রয়েছে জনবসতি আবার কোনওটা বা জনবসতিহীন। পশ্চিমের অস্তগামী সূর্যের আলোয় আকাশের প্রচ্ছদপটে ভেড়ির উপর দাঁড়ানো মানুষের বিচিত্র রূপ ভেসে ওঠে। নগ্নপ্রায় দেহগুলির আদল দেখলে মনে হবে না এরা খুব বলিষ্ঠ। তবে নোনায় পোড় খাওয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি জানিয়ে দেয় এরা সংগ্রামী মানুষ। প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে নানবিধ অস্ত্র। কুড়ুল, কাটারী, কোদাল, কোঁচ, জাল, বোঠে– কিছু না কিছু হাতে আছেই। না রেখে বোধহয় এদের নিস্তার নেই। কিছু না থাকলেও হাতে একটা লাঠি নিশ্চয় দেখা যাবে। অবিরাম সংগ্রাম– জীবিকার সংগ্রাম, খরস্রোতা জলধারার বিরুদ্ধে সংগ্রাম, আর সবচেয়ে বড় সংগ্রাম নোনার বিরুদ্ধে। তাই নোনায় পোড় খাওয়া দেহগুলি দেখলেই চেনা যায়, ওরা বাদাবনের মানুষ। আলো থাকতে থাকতেই আমাদের নৌকা এসে হাজির হয়েছে ছোট্ট এক শিষের মুখে। লোকালয় ছাড়িয়ে আমরা অনেকদূরে, চারিদিকে জল আর গভীর জঙ্গল। এহেন বাঘের দ্বীপে আমাদের নৌকার সারেঙ অজয় খাটুয়া রাতের খাবারের আয়োজনে ব্যস্ত। ভারি মিশুকে লোক অজয়দা। সকাল থেকে কতই না গল্প শুনেছি তার মুখে। সুন্দরবনের জীবনযাত্রার গল্প, শিকারের গল্প আরও কত কী। সবই যেন তার কণ্ঠস্থ। কিন্তু শত আবদারের পরও বাঘের গল্প শোনা হয়নি এখনও। যতবারই বাঘের গল্প শুনতে চেয়েছি, ততবারই একটাই জবাব,‘রাতে বলব এখন, সে সব গল্প শুনলে পরে গায়ের রক্ত হিম হয়ে যায়।’ অগত্যা রাতের অপেক্ষা করা।‘আচ্ছা অজয়দা, তুমি বাঘ দেখেছ?’ হাড়িতে ভাত চাপিয়ে নিচু গলায় তার উত্তর,‘যে দ্যাখে সে আর ফিরে আসেনা।’ মনটা ছ্যাঁত করে উঠল। জনমানবহীন নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের মাঝে বাঘ-বনের চরে আমাদের ছোট নৌকাটি আগামী ভোরের অপেক্ষায় রয়েছে। চারিদিকের জমাট অন্ধকারের বুক চিঁড়ে, বাদাবনের ঘন ঝোপের ভেতর থেকে যদি একবার দক্ষিণরায় সামনে আসে তাহলে আমাদের যে কী অবস্থা হবে তা একমাত্র বনবিবিই জানেন। তবুও মনে রয়েছে বাঘ দেখার অদম্য ইচ্ছে। খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে, হ্যারিকেনের আলোয়, অজয়দাকে ঘিরে আমরা পাঁচজন বসলাম বাঘের গল্প শুনতে। বাইরে পৌষের শীত, কনকনে জলো হাওয়া মাঝে মাঝে নৌকার খোলে ঢুকে শীতের দাপট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। অজয়দা একটা বিড়ি ধরিয়ে এক গাল ধোঁয়া ছেড়ে শুরু করল তার গল্প।   অনেক বছর আগের ঘটনা। মধু বা মাছ ছাড়াও গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলো পেটের দায়ে জঙ্গলের কাঠ আনতে হাজির হতো বাঘের সাম্রাজ্যে। নদী খাল পেড়িয়ে ঢুকে পড়তো বিপজ্জনক শিষের ভেতর। এমনি একটা শিষের মুখে দাড়িয়েছিল নিতাই মন্ডলের ডিঙি। সারাদিন ধরে সামান্য কাঠ বোঝাই হয়েছে। ওদিকে দুপুর গড়িয়ে গেছে। সে রাত ছিল পূর্নিমার। আলো থাকতে থাকতে না বেরোতে পারলে চরম বিপদের সম্ভাবনা। বাদাবনের প্রবাদ, পূর্নিমার রাতেই হয় তেনার আনাগোনা। বিকেলের পড়ন্ত সূর্যের আলোয় নিতাই তার কাকাকে ডেকে বলল,‘এক কাজ করো, তুমি ভাত চাপিয়ে দাও, আমি ততক্ষনে দেখি আরো কিছু কাঠ আনতে পারি কি না। কাছেই যাবো, তোমার চিন্তা নেই।’ কাকার উত্তরের অপেক্ষা না করেই নিতাই কুড়ুল হাতে ডিঙি থেকে নেমে পড়লো। বাঘ দেখার বড় সাধ তার। কাকাকে অনেকবার বলেছে সে, কিন্তু যে দ্যাখে তাকে আর বন থেকে ফিরতে হয় না। ও যে সাক্ষাৎ যম, একবার সামনে এলে, কারোর নিস্তার নেই। শিষেতে তখন অল্প জল, পরিখার মতো বেশ গভীর। সামান্য জল, তবে ভীষণ কাদা। একবার পা বসে গেলে যেন কামড়ে টেনে ধরে রাখে। নিতাই কাদা এড়িয়ে পাড় ঘেঁষে শিষে ধরে এগিয়ে চলে। চারিদিকে তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। শিষের ভেতর দাঁড়িয়ে দু’পাশের গাছ বড়ো একটা দেখা যায় না। অগত্যা পাড়ের খাড়াতে বুক লাগিয়ে গাছের শেকড় ধরে হিচঁড়ে উপরে উঠল নিতাই। কিছুটা ইতস্তত ঘোড়াঘুড়ি করে বাদাবনের দিকে চোখ পড়তেই দেখতে পেল একজোড়া জ্বলন্ত চোখ তার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে। হয়তো বা অনেকক্ষণ ধরেই তার চলাফেরার উপর নজর রেখেছিলেন বাদাবনের রাজা। প্রথমবার চোখের সামনে বাঘ দেখল নিতাই। তার সামান্য অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে হিংস্র গর্জন ঝাপিয়ে পড়ল নিতাইয়ের উপর। তার হাতের কুড়ুল ছিটকে পড়ল কাদায়। নিতাই চিৎকার করে উঠল,‘কা–কা।’ সে ডাক পৌঁছনোর আগেই বাঘের হুঙ্কারে তার কাকার ব্যাপার বুঝতে দেরি হল না। কিন্তু উপায় নেই, কি-ই বা করবে সে। সামনে গেলে অবধারিত মৃত্যু। দ্রুত ডিঙির বাঁধন খুলে দিয়ে বড় নদীর দিকে এগিয়ে চললো। একবার শুধু বললো,‘চেয়েছিলি বাঘ দেখতে, দেখলি তো বাঘ! বাঘ দেখার সাধ মিটেছে?’ এইটুকু বলে থামল অজয়দা। হাতের বিড়িটা অনেকক্ষণ শেষ হয়ে গেছে। কালো জলের বুকে হাল্কা ঢেউয়ে আমাদের নৌকাটা একটু দুলে উঠল। চারিদিকের জমাট কালো অন্ধকারে মনে হল দূরের বাদাবন থেকে এক জোড়া জ্বলন্ত চোখ হিংস্র দৃষ্টিতে আমাদেরকে জরিপ করে চলেছে। ঘোরটা কাটল অজয়দার ডাকে।‘ভিতরে আসেন বাবুরা, বাকিটা শুনবেন তো।’ পাঁচজনে আবার গিয়ে ঢুকলাম নৌকার পেটে। শুরু হল বাঘের গল্প। ওদিকে শিষের ধারে চলছে বাঘে মানুষের লড়াই। বাঘের জোড়ালো থাবায় টাল সামলাতে না পেরে কাদায় আছড়ে পড়লো নিতাই। বাঘও তার সঙ্গে বেসামাল অবস্থায় গড়িয়ে পড়লো শিষের কাদায়। তার ওই ভারি শরীর নিয়ে চার পায়ে লাফ দিয়ে উঠতে গিয়ে আটকে গেল পলিমাটির চোরা কাদায়। যতবারই সে গায়ের জোরে ওঠার চেষ্টা করে ততবারই আরো আটকে পরে নরম কাদায়। সেই সুযোগে আহত নিতাই ঝাঁপিয়ে পড়লো বাঘের উপর। শরীরের সমস্ত ওজন ও শক্তি দিয়ে তাকে চেপে ধরলো কাদার ভিতর। বাঘও ছাড়বার পাত্র নয়। ঘাড় বেঁকিয়ে চেষ্টা করে তার শিকার ধরতে। বেপরোয়া নিতাই প্রাণের দায়ে কামড়ে ধরলো বাঘের চামড়া। শিষেতে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে নোনা জলের ধারা। নরম কাদায় ক্রমশ বাঘের ঘাড় পর্যন্ত ডুবে যেতে লাগলো। নোনা জল তার চোখে, নাকে ও মুখে ঢুকে বাঘের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সেই সুযোগে নিতাইও বাঘের পিঠের উপর চড়ে বসে। আসুরিক শক্তিতে তার দু’হাত দিয়ে বাঘের মাথা চেপে ধরে নোনা জলের কাদায়। এ যাত্রায় হার মেনে নেয় বাদাবনের রাজা। দম আটকে মৃত্যু হয় বাঘের। চারিদিক জ্যোৎস্নার আলোয় আলোকিত। বাঘের লম্বা লেজটা তখনও উঁচু হয়ে আছে কাদার উপর। ক্লান্ত-বিধ্বস্ত শরীরে নিতাই কোনোমতে এসে হাজির হলো খালের মুখে। কিন্তু কেউ কোত্থাও নেই। একবার চিৎকার করে ডাকলো,‘কা-কা’। নিবীড় অরণ্যের জ্যোৎস্নামাখা ডালে ডালে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে তার ডাক। জোয়ার আসতে তখনও দেরি। নিতাইয়ের গলা শুনতে পেয়েই তার কাকা দ্রুত গতিতে নৌকা নিয়ে ফিরে এল। অবাক হয়ে শুধলো‘তুই বেঁচে আছিস? একি বীভৎস চেহারা হয়েছে তোর! তোর মুখে ও কী?’ খেয়াল হলো নিতাইয়ের। তার দাঁতের ফাঁকে তখনও লেগে আছে বাঘের গায়ের লোম। সারা শরীরে ও মুখে ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন। বাঁ হাত দিয়ে ঝরে পড়ছে রক্ত। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই নিতাইয়ের। জ্ঞান হারানোর আগে কাকাকে বলল,‘আমি বাঘ দেখেছি’। কয়েক মাসের মধ্যেই নিতাই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে, কিন্তু তার শরীরের দাগ আজও বহন করে চলেছে সেই রাতের নারকীয় অভিজ্ঞতার কাহিনী।   বাঘে-মানুষের লড়াইয়ের রুদ্ধশ্বাস কাহিনী শুনতে শুনতে ভুলেই গেছিলাম সময়ের কথা। ঘড়ির দিকে নজর পড়তে দেখি রাত প্রায় দুটো। বাইরের নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে কুয়াশার চাদর গায়ে সুন্দরবন তখন ঘুমে কাদা। বাদাবনের নিশাচর রাজা ঘুমন্তপুরীর আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার শিকারের খোঁজে।“একটা কথা জানেন কি বাবুরা? বাতাসের গতি সুন্দরবনে এক মহা নির্দেশক।” অজয়দার কথায় আমরা একসঙ্গে প্রশ্ন করে উঠলাম,“সেটা কেমন?” সামনে একটু দূরে কেরোসিনের ডিবে। আলো যতটা দিচ্ছে তার চেয়ে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে দ্বিগুন। অজয়দার দৃষ্টি আলো ডিঙিয়ে উপর দিকে। পেতলের ছোট্ট যাঁতায় খুঁটখুঁট করে গুঁড়িয়ে চলেছে সুপুরির দানাগুলো। পান সাজা শেষ করে তা মুখে ফেলে চিবোতে চিবোতে বলল,“বনের বাঘ এই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। ওরা বাতাসের গতি অনুমান করে নেয় ঠোঁটের দু’কোনার গোঁফ দিয়ে। বাঘ কখনই মুহড় বাতাস ছাড়া শিকারের দিকে এগোবে না। শিকারের নাকে ওদের গায়ের তীব্র গন্ধ যাতে না পৌঁছয় সে সম্পর্কে ওরা যথেষ্ট সচেতন। বাদাবনের বাঘের কারবার এই রাতের অন্ধকারে। খাস বনের খবর হয়তো আলাদা, কিন্তু গ্রামে এলে বাঘ কেমন যেন বুঝে ফেলে যে শত্রু তাঁর চারিদিকে। বেশি হাঁকডাকও করেনা, নিশুতি রাতে শিকার করে চুপিসারে।” বুকের ভেতরটা ছ্যাঁত করে উঠল। অজান্তেই চোখ দুটো চলে গেল দূরের বাদাবনের চরে। বনের নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে একটানা ঝিঁঝিঁর ডাক শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নেই। ঘুম ভাঙল পাখির ডাকে। পূবের আকাশে তখন আলোর ছটা। কুয়াশা সরে দূরের বাদাবন এখন অনেকটাই স্পষ্ট। একটা আওয়াজ পাচ্ছিলাম অনেকক্ষণ থেকে, উৎসটা বোঝা গেল সেটা কাছে আসতে। একটা ছোট ভুটভুটি, আর তার থেকে এক ভদ্রলোক এগিয়ে এসে অজয়দার সঙ্গে খানিকক্ষণ কথা বলে ফিরে গেলেন উল্টোপথে। অজয়দার মুখের ভাব দেখে বুঝলাম গতিক সুবিধের নয়।“কি বললেন ভদ্রলোক?” একটা আকস্মিক উত্তরের অপেক্ষায় ছিলাম, কিন্তু সেটা যে এতটাই আকস্মিক হবে বুঝতে পারিনি।“বাবুরা, কাল রাতের বেলায় সামনের চরে বাঘ এসেছিল। দু’জোড়া টাটকা পায়ের ছাপ উত্তরের জঙ্গলে দিকে গিয়ে মিলিয়ে গিয়েছে।”

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রুকস্যাক

ভ্রমণ : বাগুরানের বেলাভূমিতে।

Published

on

Social Update Bengali News Image

দেবস্মিতা ঘোষ : বাতাসে শীতের আমেজ, সোনালী রোদের অকৃত্রিম স্নেহে আগলে নেওয়া স্বভাব, সুনীল আকাশ সবে মিলে প্রকৃতি যেন কোল পেতে বসে দুবাহু বাড়িয়ে অপেক্ষা করছে। আর আপনিও বুঝি নাগরিক ঘোড়দৌড়ে বিধ্বস্ত ????

বেশি নয়, ব্যস্ততার চোখরাঙানি থেকে এক কি দুই দিনের ছুটি বন্দোবস্ত করতে পারলেই মিলবে মুক্তির আস্বাদ। দিগন্তজোড়া নীলের মেলবন্ধন, চোখের পাতায় নেমে আসা বালির চড়, গর্জনরত সমুদ্রের ঢেউ এর মাঝে একান্তে অবসার কাটাতে পৌঁছে যান পূর্ব মেদিনীপুরের বগুড়ান জলপাই এর সমুদ্র তটে।

কলকাতার ধর্মতলা থেকে বাস ধরে বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন এ কাঁথি পৌঁছে যান। কাঁথি থেকে টোটোতে ২৫০-৩০০ টাকার বিনিময়ে প্রায়ে ২৪ কিমি পথ অতিক্রম করে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছে যান বগুড়ান জলপাই এর সমুদ্রতীরে। সমুদ্র এখানে শান্ত।

আর একটি অভিনব বিষয় হল জোয়ারের সময় সমুদ্র তীরের অনেক কাছে চলে আসে আবার ভাটার সময় অনেক দূরে চলে যায়। সারা তত জুড়ে দেখতে পাওয়া যায় লাল কাঁকড়ার অবাধে ছুটোছুটি করে লুকোচুরি খেলা। সমুদ্রে সূর্যোদয় সাক্ষী থাকা এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। তাই হাতে ছুটি একদিন বেশি থাকলে একদিন থেকে যাওয়ায় ভালো।

দিঘা, মান্ডারমনি বা জুনপুটের মতো পর্যটন এর ঘেরাটোপ বগুরান কে গ্রাস করেনি এখনো। তাই অফবিট এ নিরিবিলি ছুটি কাটানোর সেরা ঠিকানা হল বগুরান। জুনুপুট সমুদ্রতীর, দরিয়াপুর, কপালকুণ্ডলা মন্দির কাছাকাছির মধ্যেই ঘুরে দেখে নেয়া যায়। এখান থেকে আপনি আশে পাশের সমুদ্রসৈকত গুলিও ঘুরে আসতে পারেন যেমন বাঁকিপুট, দিঘা, মান্ডারমনি, তাজপুর।

তবে এখানে রাত্রিবাসের একমাত্র ঠিকানা হলো হোটেল সাগর নিরালা। কারণ খুব বেশিদিন হয়নি বগুরান বাংলার ভ্রমণ মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। শহুরে জীবন যেসমস্ত সুবিধায় অভ্যস্ত সেই সব রকম সুবিধা এবং তিনবেলার আহার নিয়ে রাত্রিবাসের খরচ মোটামুটি কমবেশি ১০০০ টাকা।

এই শীতে তবে উইকেন্ডে প্ল্যান করেই ফেলুন বগুরান জলপাই সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ। রোদ্দুরে পিঠ পেতে বসে বালিতে আঙ্গুল দিয়ে বিলি কেটে কেটে, কিংবা লাল কাঁকড়ার দল কে গর্ত অবধি ধাওয়া করে, কিংবা আবার ভোরের আধো আলোয় প্রিয়জনের সাথে ঝিনুক কুড়িয়ে দারুন কাটবে ছুটির দিনগুলো।

Continue Reading
Advertisement
Advertisement
Advertisement e

আমাদের ফেসবুকে পেজ লাইক করুন

Advertisement
Advertisement

জনপ্রিয় পোস্ট