রুকস্যাক
আমার চোখে দিল্লী – আগ্রা
![Social Update Bengali News Image](https://socialupdate.in/wp-content/uploads/2020/11/delhi-tourism-socialupdate.jpg)
পর্ব ১আমার চোখে দিল্লী – আগ্রা
রীতা বসু : “স্বর্গ যদি থাকে ধরার মাঝে এইখানে তা এইখানে তা এইখানে তা রাজে” স্বর্গ কোথায়, কেমন সেই স্থান আমরা কেউ জানি না।আমাদের কল্পনায় স্বর্গ এমন একটি স্থান যেখানে আছে অপার সৌন্দর্য্য আর শান্তি।তাজমহলের সামনে এসে দাঁড়ালে সেই স্বর্গের প্রশান্তি অনুভূত হয়।সম্রাট সাজাহান তাঁর প্রিয়তমা বেগমের স্মৃতির সন্মানে যা সৃষ্টি করে গেছেন তার এক শতাংশও হয়তো আজ আর অবশিষ্ট নেই।আমরা তাজের রাজকীয় সজ্জিত রূপ কোনোদিন কোনো ছবিতেও দেখি নি, কোনো শিল্পীর তুলির আঁচড়ও সে সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে সক্ষম হয় নি,তবু আজও যা আছে তাই বা কম কিসে?দূর দূরান্তের পর্যটকরা আজও ছুটে আসেন তাজের সৌন্দর্য্যের আকর্ষনে। তার ভাস্কর্য,তার গঠন বৈচিত্র আজও এক বিরাট বিস্ময়। তাজের সামনে দাঁড়িয়ে তার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে কয়েক পা পিছিয়ে আসলে মনে হয় নীল আকাশের গায়ে তুলি দিয়ে আঁকা সুন্দর এক ভাস্কর্য।
ভাবলে অবাক লাগে কত যুগ আগে গঠিত এই তাজমহলের গঠন হয়েছে গনিতের নির্ভুল আঁক কসে।একটু চ্যুতি কোথাও নেই।একটা যোগ(+) চিহ্নের সংযোগ স্থলে আছে তাজমহল আর চার মাথায় চারটি প্রবেশদ্বার এমন ভাবে আঁক কসে গঠন করা হয়েছে যে দক্ষিন দ্বার থেকে উত্তরদ্বার দেখা যায় না আবার পশ্চিম দ্বার থেকে পূবের দ্বার দেখা যায় না অথচ যে কোনো দ্বার থেকে দেখলে তাজমহল একই রকম।প্রতিটি দ্বারের মাথায় সামনে থেকে দেখা যায় এগারটা গম্বুজ,ভেতরের দিকেও ঠিক ওমনি এগারটা গম্বুজ এমন ভাবে স্থাপিত যে যেদিক থেকে দেখা যাক মনে হবে এগারটা গম্বুজ আসলে আছে বাইশটা গম্বুজ। অর্থাৎ বাইশ বছর লেগেছিল এই বিস্ময়কে গঠন করতে। প্রত্যেক ঈদের চাঁদের সাথে সাযুজ্য রেখে ওগুলো স্থাপন করা। ফোয়ারাগুলো দিয়ে গঠনের সালকে ধরে রেখেছে। এ ছাড়াও আছে ভাস্কর্য। তাজের গায়ে যে রঙিন পাথরের কারুকার্য আছে তা দেখলে মনে হয় যেন তুলিতে আঁকা এমন নিঁখুত তার শিল্প।
আমরা সম্রাট সাজাহানের সৃষ্টি দেখে বিস্মিত হই।মমতাজ বেগমের স্মৃতিসৌধ দেখে মহিত হই কিন্তু যাঁরা অসীম ধৈর্য্য আর দক্ষতায় এই বিস্ময়কে গঠন করেছেন তাঁদের কথা কি একবারও স্মরন করি?বা তাঁদের নাম কি আমরা জানি? জানি না ।সম্রাট সাজাহান আর মমতাজ বেগম অমর হয়ে আছেন আর যাঁরা অন্তরালে ছিলেন তাঁরা বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছেন। এই তাজমহল দেখার ইচ্ছা ছিল ছোটোবেলা থেকে।একবার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম ১৯৭৮ সালে। কিন্তু প্রকৃতি বিরূপ, ভয়ানক বন্যায় সব ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়াতে আমার আশা পূর্ন হয় নি।এত বছর পরে আবার সুযোগ এলো বেড়িয়ে পরলাম সেই সৌন্দর্য্যের আকর্ষনে।
রুকস্যাক
ভ্রমণ : বাগুরানের বেলাভূমিতে।
![Social Update Bengali News Image](https://socialupdate.in/wp-content/uploads/2020/12/Baguran-Jalpai.jpg)
দেবস্মিতা ঘোষ : বাতাসে শীতের আমেজ, সোনালী রোদের অকৃত্রিম স্নেহে আগলে নেওয়া স্বভাব, সুনীল আকাশ সবে মিলে প্রকৃতি যেন কোল পেতে বসে দুবাহু বাড়িয়ে অপেক্ষা করছে। আর আপনিও বুঝি নাগরিক ঘোড়দৌড়ে বিধ্বস্ত ????
বেশি নয়, ব্যস্ততার চোখরাঙানি থেকে এক কি দুই দিনের ছুটি বন্দোবস্ত করতে পারলেই মিলবে মুক্তির আস্বাদ। দিগন্তজোড়া নীলের মেলবন্ধন, চোখের পাতায় নেমে আসা বালির চড়, গর্জনরত সমুদ্রের ঢেউ এর মাঝে একান্তে অবসার কাটাতে পৌঁছে যান পূর্ব মেদিনীপুরের বগুড়ান জলপাই এর সমুদ্র তটে।
কলকাতার ধর্মতলা থেকে বাস ধরে বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন এ কাঁথি পৌঁছে যান। কাঁথি থেকে টোটোতে ২৫০-৩০০ টাকার বিনিময়ে প্রায়ে ২৪ কিমি পথ অতিক্রম করে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছে যান বগুড়ান জলপাই এর সমুদ্রতীরে। সমুদ্র এখানে শান্ত।
আর একটি অভিনব বিষয় হল জোয়ারের সময় সমুদ্র তীরের অনেক কাছে চলে আসে আবার ভাটার সময় অনেক দূরে চলে যায়। সারা তত জুড়ে দেখতে পাওয়া যায় লাল কাঁকড়ার অবাধে ছুটোছুটি করে লুকোচুরি খেলা। সমুদ্রে সূর্যোদয় সাক্ষী থাকা এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। তাই হাতে ছুটি একদিন বেশি থাকলে একদিন থেকে যাওয়ায় ভালো।
দিঘা, মান্ডারমনি বা জুনপুটের মতো পর্যটন এর ঘেরাটোপ বগুরান কে গ্রাস করেনি এখনো। তাই অফবিট এ নিরিবিলি ছুটি কাটানোর সেরা ঠিকানা হল বগুরান। জুনুপুট সমুদ্রতীর, দরিয়াপুর, কপালকুণ্ডলা মন্দির কাছাকাছির মধ্যেই ঘুরে দেখে নেয়া যায়। এখান থেকে আপনি আশে পাশের সমুদ্রসৈকত গুলিও ঘুরে আসতে পারেন যেমন বাঁকিপুট, দিঘা, মান্ডারমনি, তাজপুর।
তবে এখানে রাত্রিবাসের একমাত্র ঠিকানা হলো হোটেল সাগর নিরালা। কারণ খুব বেশিদিন হয়নি বগুরান বাংলার ভ্রমণ মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। শহুরে জীবন যেসমস্ত সুবিধায় অভ্যস্ত সেই সব রকম সুবিধা এবং তিনবেলার আহার নিয়ে রাত্রিবাসের খরচ মোটামুটি কমবেশি ১০০০ টাকা।
এই শীতে তবে উইকেন্ডে প্ল্যান করেই ফেলুন বগুরান জলপাই সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ। রোদ্দুরে পিঠ পেতে বসে বালিতে আঙ্গুল দিয়ে বিলি কেটে কেটে, কিংবা লাল কাঁকড়ার দল কে গর্ত অবধি ধাওয়া করে, কিংবা আবার ভোরের আধো আলোয় প্রিয়জনের সাথে ঝিনুক কুড়িয়ে দারুন কাটবে ছুটির দিনগুলো।
জীবন ভাট্টাচার্য
November 3, 2020 at 8:48 pm
খুব ভাল একটা লেখা পড়লাম