শিক্ষা
বাতিল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
নিজস্ব প্রতিনিধি : দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। করোনা পরিস্থিতির জেরে এবছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেস্ট পরীক্ষা ছাড়াই এবার সবাই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পড়ুয়ারা বসতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ। হাজার-হাজার মানুষ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
করোনা পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কবে হবে, কীভাবে হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরীক্ষার্থীরা। কারণ, প্রতিবছর নভেম্বরেই হয় মাধ্যমিকের টেস্ট। আর ডিসেম্বরে হয় উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। কিন্তু করোনার কারণে চলতি বছরের মার্চ থেকে বন্ধ স্কুল। অনলাইন ক্লাস চললেও টেস্ট এখনও হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়াদের মনে প্রশ্ন ছিল, তাহলে কবে হবে টেস্ট?
বুধবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আগামী বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট দিতে হবে না। সরাসরি ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে পারবে তারা। কিন্তু প্রতিবারের মতো ফেব্রুয়ারির শেষভাগে মাধ্যমিক আর মার্চেই কি হবে উচ্চমাধ্যমিক? এপ্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “পরীক্ষা হবে। কিন্তু তা নির্দিষ্ট সময়ে হবে কি না, তা জানা নেই। কারণ এখনও স্কুল বন্ধ। তবে কী সিদ্ধান্ত হচ্ছে তা শিক্ষাদপ্তর মারফত জানানো হবে।”
স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রে টেস্ট পরীক্ষা না নেওয়ার ফলে বাড়তি সুবিধা পাবে স্কুলগুলি। কারণ স্কুল যদি খুলে দেওয়া যায় তাহলে সময় পাওয়া যাবে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়ার।
বুধবার দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে এই ঘোষণার পাশাপাশি টেট উত্তীর্ণদের নিয়েও বড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই চাকরির দাবিতে সরব হয়েছেন টেট উত্তীর্ণরা। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরি প্রার্থীদের জন্য কোনো তৎপরতা গ্ৰহণ করতে পারেনি সরকার।
তবে বুধবার নবান্ন থেকে টেট উত্তীর্ণদের আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, ‘টেট উত্তীর্ণদের সবাই চাকরি পাবেন। টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার। করোনা কমলেই টেট উত্তীর্ণদের চাকরিতে নিয়োগ করা হবে’। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘সাড়ে ১৬ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে টেট উত্তীর্ণদের। ২ মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলেও এদিন আশ্বাস দিয়েছেন’।
শিক্ষা
ICSE দশম ও ISC দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার দিন ঘোষণা করলো বোর্ড।
নিজস্ব প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতির জন্য প্রায় একবছর বন্ধ বিদ্যালয়, তবে একে বারে বন্ধ হয়ে যায়নি পঠন পাঠন। ভার্চুয়াল ভাবেই চলছিল শিক্ষার আদান-প্রদান। এবার পরীক্ষা নেওয়ার পালা। কিন্তু বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন থাকায় কবে কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত সপ্তাহে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ায় সেই জট কেটেছে। কাজেই আর দেরি না করে প্রকাশ করা হল বোর্ডের পরীক্ষার সূচি।
গত সোমবার সন্ধ্যায় আইসিএসই বোর্ড কর্তৃপক্ষ আগামী পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে না বরং লিখিত মাধ্যমেই হবে এই পরীক্ষা গুলি। মে মাসের ৫ তারিখেই শুরু হচ্ছে দশম শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা, চলবে জুন মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত। অন্য দিকে আইএসসি, অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৮ এপ্রিল, পরীক্ষা শেষ হচ্ছে ১৬ জুন।
দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্স পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল প্ল্যানিং সেশন হবে ৮ এপ্রিল, হোম সায়েন্স পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল প্ল্যানিং সেশন এবং ইন্ডিয়ান মিউজ়িক কর্নাটকি পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল হবে ৯ এপ্রিল। বাকি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা গুলোর ক্ষেত্রে বিদ্যালয় গুলিকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে মে মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো সেই সমস্ত পরীক্ষা নিতে পারবে স্কুলগুলি। পরীক্ষার বিস্তারিত সূচি জানা যাবে বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.cisce.org)।
আইসিএসই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন জানিয়েছিলেন, এ বার পরীক্ষা হবে কোভিড-বিধি মেনে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে মাস্ক ও নিজস্ব স্যানিটাইজ়ার সঙ্গে আনতে হবে। তবে পরীক্ষার্থীরা দস্তানা পড়বেন কি না সেই বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট বিধি জানায়নি বোর্ড। এ বিষয়ে ছাত্র ছাত্রীদের স্বাধীনতা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে রাখতে হবে জলের বোতলও। এই সমস্ত নিয়ম ছাড়াও আরও বেশকিছু বিধি ঘোষণা করেছে বোর্ড। এবার বন্ধু বান্ধবী মিলে আর টিফিন ভাগ করে খাওয়া যাবে না। পরীক্ষার সরঞ্জাম তথা পেন, স্কেল প্রভৃতি নেওয়া যাবে না অন্যের কাছ থেকে। মূলত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে যেতেই ব্যবস্থা।
দশম শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে। প্রশ্ন পত্র দেওয়া হবে ১০টা ৪৫ মিনিটে। উত্তর লেখা শুরু করতে হবে ১১টা থেকে। অন্য দিকে, দ্বাদশ শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর ২টো থেকে। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে অর্থাৎ ১টা ৪৫ মিনিটে দিয়ে দেওয়া হবে প্রশ্নপত্র। লেখা শুরু করা যাবে দুপুর ২টোয়।