কলমের আঁচড়ে
আফ্রিকা নয়, এটা ভারতের কালো ঘরের গল্প..
অর্ণব রায় : একটা পর্দা আবৃত কালো কুচকুচে ঘর।আসমা এখানে আগে কোনদিনও আসেনি। আজ যে কেন দাদি তাকে এখানে এনেছে তা সে কিছুতেই বুঝতে পারছেনা।দাদির কিনে দেওয়া আইসক্রিমটা এখনো সে পুরোপুরি শেষ করে উঠতে পারেনি।”আসমা ভারি সুন্দর নাম তো”কে বললো কথাটা ?অন্ধকারে তো দেখাও যায় না ভালো।আসমা এখন সবে সাত বছরে পড়েছে।পাশের বাড়ির দিদির মত তারও স্কুলে যাওয়ার খুব ইচ্ছে, কিন্তু আম্মাকে সে যতবার এই ইচ্ছের কথা জানিয়েছে আম্মা উত্তর দেয় না কিছু, কবে যে সে স্কুল যেতে পারবে তা সে জানে না।আজ দাদি হঠাৎই আইসক্রিম খাওয়ার প্রস্তাব দেয় আসমাকে।আসমা আইসক্রিম খেতে খুবই ভালোবাসে, তাই এই প্রস্তাব কি না করা যায়?আম্মাকে জানিয়ে দাদির হাত ধরে আসমা বাজারের জন্য রওনা হল।
আজকে আসমার আম্মার মুখটা যেন কেমন হয়েছে আছে।আসমা বেরিয়ে আসার সময় মাকে বলে আসলো।আম্মা সেরকম কিছু বলল না।আসমা এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার ঘোর কাটল আরো একটা প্রশ্নে। “আইসক্রিম খেতে তোমার খুব ভালো লাগে তাই না বেটি?”এবার আসমা ভালো করে তাকিয়ে দেখলো তার দাদির মতনই দেখতে একজন বয়স্কা মহিলা তাকে এই প্রশ্ন গুলো করছে।সে সবে উত্তরটা দিতে যাচ্ছিল,হঠাৎ করে পেছন থেকে তার হাতটা যেন কেউ চেপে ধরেছে । সে নিজেকে সামলে সবে তার দাদিকে ডাকতে যাবে সে সময়, তার দাদির গলা কানে এল”ভয় পাস না বেটি এটা কিছুক্ষণের ব্যাপার, কিচ্ছু হবে না আমি তো আছি এখানেই”সাত বছরের আসমা দাদির কথা শুনে ভাল মেয়ের মতো চুপ করে শুয়ে পড়ল। আসমা পা দুটো কে কেউ জোর করে ফাঁক করে রেখেছে। সে চাইলেও নড়াচড়া করতে পারছেনা । সে এবার বুঝতে পড়ল তার কামিজ টা খুলে দেওয়া হয়েছে , ভয় পেয়ে আসমা দাদিকে আবার ডাকতে গেলো।
“দাদি… “বেটি ভয় পাস না, আমি আছি”। আসমার হাতে আইস ক্রিম তখনও রয়েছে। তার বিশ্বাস সে আবার আইসক্রিমটা খেতে পারবে, দাদি বলেছে কিছুক্ষণের ব্যাপার । কিন্তু সে এখনো জানেনা তার সাথে কি হচ্ছে। এরপর একটা অসহ্য চিৎকারে পর্দা ঘেরা কালো ঘরটা কেপে উঠলো। এরম চিৎকার সচরাচর মানুষ আগুনে পুড়লে করে। আসমা শুধু এটুকুই বুঝেছিল গরম কিছু ছুঁচলো দিয়ে তার নিচে কোনো ক্ষত সৃষ্টি করা হলো। এ ব্যথা সে আগে কখনো অনুভব করেনি। কিন্তু দাদি যে বলেছিল….। ঘটনাটা নিশ্চয় খুব পরিচিত বলে মনে হচ্ছে, তাই না?না না না এটা আফ্রিকার কথা নয়।এটা ‘ভেন্ডি বাজার’, এখনও বুঝলেন না ‘বহরা মহল্লা’,‘ঠাট্টা’ করছেন ? মুম্বাইয়ের কথা হচ্ছে এখানে ।‘ভারতবর্ষের’ হ্যা আপনার আমার‘ভারতবর্ষ’।
‘বহরা’ সম্প্রদায় এর এটি একটি গুপ্ত কর্মকাণ্ড যা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে, আমার আপনার চোখের আড়ালে। যার কোন ধর্মীয় আধার না থাকলেও রয়েছে ব্যক্তিগত সাংস্কৃতিক বিশ্বাস। ইউনাইটেড নেশন (UN) এর মতে ‘Female Gentle Mutilation’ বা FGM একটি আইনত অপরাধ।কিন্তু ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে, এটার বিরোধিতা করে ৪০০০০ বহোরা মহিলা গোষ্ঠী অনলাইন পিটিশন জমা দেয় ২০১৬ এ।
২০১৭ সালের মে মাসে তৎকালীন Women and Child Development Minister, মেনকা গান্ধী বলেন যদি এটিকে‘স্বেচ্ছাকৃত’ ভাবে বন্ধ না করা হয় তবে সরকারকে টি ব্যান করতে বাধ্য হবে। সেই বছরই ডিসেম্বর মাসে সরকারি তরফে জানানো হয় এই সম্বন্ধিত কোন‘অফিশিয়াল রিপোর্ট’ নেই।তারপর দীর্ঘ সময় সুপ্রিম কোর্টে কেস চলে, এক বেঞ্চ থেকে আরেক বেঞ্চে এই কেস স্থানান্তরিত হতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে কেশ চলার পর এখনো এই ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের রায়স্বচ্ছনয়।এখন পর্যন্ত এই নিয়ে ভারতে নির্দিষ্ট কোন আইন নেই, কারণ ভারত সরকার এখনও এটারঅস্তিত্বের প্রমাণনেই বলেই বিশ্বাস করে। যদিও FGM নিয়ে বহরা কমিউনিটির মহিলারা বার বার প্রতিবাদ করেছেন এমনকি ২০১৯ এও তারা প্রতিবাদ করেছেন। প্রায় এক মাস আগে সুদানে FGM ব্যান করা হয়েছে কিন্তু ভারতে কেন এখনও কোনও স্পষ্ট আইন নেই?
একটা স্ট্যাটিস্টিকাল রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষে এখন FMG বন্ধ । কিন্তু সেই রিপোর্টটি কতটা সঠিক, প্রকৃতপক্ষে সেটার কোন প্রমাণ পাওয়া খুবই মুশকিল। অবাক হচ্ছেন?অবাক হওয়া এখনও বাকি আছে।কোরান এ কোথাও এই ঘটনার উল্লেখ করা নেই যে FGM করা বাধ্যতামূলক। সমানভাবে বাইবেলেও এটা কোথাও বাধ্যতামূলক ভাবে উল্লেখ নেই। তাহলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই মস্তিষ্কহীন ধারণাটার অসহ্য ভার, বহরা গোষ্ঠীর মহিলাদের এখনো কেন সহ্য করে যেতে হবে।উত্তরটা খুবই সোজা । পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নারীদের নিজেদের ইচ্ছে , বিবাহর আগে বা পরে কোন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া রাস্তা কে বন্ধ করা। অনেকে তো আবার এটাও মনে করেন FGM না হওয়া মেয়েদের রাস্তায় হাঁটাচলা করাটাও নাকি খুবই অসুরক্ষিত।আরো অনেক নানান মতামত রয়েছে যেরম ধরুন, স্ত্রী যোনির অপ্রয়োজনীয় অংশ ‘হারাম কি বটি’ তাই সেটি বাদ দেওয়াই কাম্য।
উগান্ডা, গানা, আরো আফ্রিকান অনেক ছোট ছোট প্রগতির আলো থেকে অনেক পিছিয়ে থাকা দেশগুলিতে, এটি সোচারে পালন করা হয় দেখেই লোকের রাতেও ঘুম উড়ে যাচ্ছে, উঠছে নতুন নতুন তর্কের ঝড় ।প্রগতিশীল ভারতের কথা সেখানে যুক্ত হয়ে আছে অনেক দশক ধরে । এতদিন কেটে যাবার পরও এই বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে কেন কোন স্বচ্ছ ধারণা তুলে ধরতে পারেনি‘ভারত সরকার’ এটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখনও যারা Female Gentle Mutilation (FGM)সম্বন্ধে উদাসীন।তারা নীল হয়ে থাকা শব্দগুলি উপর ক্লিক করুন বিসদে জানতে।
কলমের আঁচড়ে
পৃথিবীর বুকে মেনে চলা কিছু বিস্ময়কর এবং ভয়ঙ্কর সত্কার-রীতি!
বিশ্বজিৎ দাস : কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বলে গেছেন “জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে?” অর্থাৎ জন্মগ্রহণ করলে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য। মানুষের মৃত্যুর পর সৎকার করা হয়। সভ্যতার প্রথম দিক থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। এই সৎকারের সময় টা খুবই কঠিন, বিশেষত নিকটজনের কাছে। সে সব আঁকড়ে থাকে, কারণ একবার ছেড়ে দিলে আর পাওয়া যাবে না। এই ভাবাবেগ থেকেই স্মৃতি রক্ষার ভাবনা শুরু। মৃতের ব্যবহৃত জিনিস রেখে দেওয়া, যেমন চুল কিছুটা কেটে যত্ন করে রেখে দেওয়া ছিল পুরনো প্রথা। অনেকে দাঁত সংরক্ষন করত। বুদ্ধের দাঁত কলকাতার জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে আজও।
কিন্তু পৃথিবীর প্রত্যেক জাতির মধ্যেই মৃত্যুর পর কিছু বিশেষ নিয়ম পালন করার রীতি আছে। কিছু নিয়ম বিজ্ঞানসম্মত আবার কিছু একেবারে অদ্ভুত। মৃতদেহ সত্কারের জন্য কেউ যেখানে মৃতদেহটি পুড়িয়ে ফেলেন, আবার কেউ বা মাটিতে কবর দেন। আবার কেউ বা সযত্নে সেটিকে কফিনজাত করেন। কিন্তু এসবের বাইরেও এমন অনেক রীতিনীতি আছে যেগুলি আমার আপনার স্বাভাবিক ভাবনা চিন্তার বাইরে।
সাধারণ মানুষের কাছে মৃত ব্যক্তিকে মাটিতে কবর দিয়ে রাখা বা আগ্নিদাহ করা পরিবেশগত কারণে মোটামুটি স্বাভাবিক মনে হলেও কিছু কিছু সংস্কৃতিতে মৃত ব্যক্তি সমাহিত করার পদ্ধতি অবাক করার মতো।
পৃথিবী জুড়ে চলা এই আশ্চর্য ও কিছুটা ভয়ঙ্কর মৃত্যু অনুষ্ঠান গুলি হল :
১. মমিফিকেশন :
এই ঘটনা আমার আপনার কিছুটা জানা। প্রাচীন মিশরের ফারাওদের মরদেহ মমি করে সমাহিত করা হতো। এই পদ্ধতিতে প্রথমে দেহের অভ্যন্তরীণ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করা হয়। এরপরে দেহের সব আর্দ্রতা অপসারিত করা হয়। শেষে লম্বা আকৃতির লিনেন কাপড় দিয়ে দেহ মুড়ে ফেলা হয়।
তবে আধুনিক মমিফিকেশন পদ্ধতি আলাদা।বর্তমানে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য কিছু রাসায়নিক তরল ভর্তি পাত্রে দেহ ডুবিয়ে রাখা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এটি মৃতদেহ সৎকারের কোনো রীতি নয়; এটি মৃতদেহ সংরক্ষণ পদ্ধতি।
২. মৃতের পুনর্জাগরণ :
এই অদ্ভুত প্রথাটি পালন করা হয় মাদাগাস্কায়। প্রতি পাঁচ থেকে সাত বছর পর পর। তার নিকটাত্মীয়রা কবর খুঁড়ে মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষ বের করে আনে। এরপর মৃত ব্যক্তিকে নতুন পোশাক পরানো হয় এবং পারিবারিক ভোজে তাকে বসিয়ে রাখা হয়।এদিন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে গানের তালে তালে নাচতেও দেখা যায়। পারিবারিক পুনর্মিলন হিসেবে প্রথাটিকে দেখা হয়।
৩. এন্ডোক্যানিবালিজম (Endocannibalism) :
এই বিশেষ মৃত্যু অনুষ্ঠানটি দেখতে পাওয়া যায় আমাজন রেইন ফরেস্টের ইয়ানোমমি উপজাতি, পাপুয়া নিউ গিনির মেলানসিয়ানস উপজাতি এবং ব্রাজিলের ওয়ারীরা উপজাতির মধ্যে।এখানে একটি মৃতদেহকে বা দেহাংশকে ভক্ষণ করা হয়। তাদের বিশ্বাস এই প্রথার মধ্যে দিয়ে মৃত ব্যাক্তির আত্মা স্বর্গে যাবে।
এই জাতির মানুষেরা বিশ্বাস করেন, মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। উপরন্তু তারা ভাবেন যে, তাদের প্রতিদ্বন্দী গোষ্ঠী কোনো অশুভ আত্মাকে প্রেরণ করেছে। সেই কারণে এই ঘটনা রোধ করার জন্য তারা এই অনুষ্ঠানটি করে থাকেন। যাতে মৃত ব্যাক্তির আত্মা জীবিত থাকে এবং তার পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারে।
এই অনুষ্ঠানটি করার জন্য প্রথমে তারা মৃতদেহটিকে পাতা দিয়ে মুড়ে বাড়ি (যেখানে তিনি মারা গেছেন) থেকে অল্প দূরে জঙ্গলে রেখে আসেন। এর পর মোটামুটি ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মাথায় সেই পঁচাগলে যাওয়া মৃতদেহ থেকে হাড় সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। এরপর কলা দিয়ে বানানো একধরণের সুপের মধ্যে মৃতদেহের ছাই মিশিয়ে গোষ্ঠীর সকলে সেটি পান করে। তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র গোষ্ঠীর শিশু ও মহিলারা পালন করেন।
৪. তিব্বত বৌদ্ধ মহিমা কবর/ তিব্বতের আকাশ সৎকার (Tibetan Buddhist Celestial Burials or Sky burial) :
এই সৎকার অনুষ্ঠানটি তিব্বতি ঐতিহ্যের প্রতীক। এই অনুষ্ঠানে মৃতদেহকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে পাহাড়ের মাথায় রেখে আসা হয় এবং পাখিদের (বিশেষত শিকারী পাখিদের) ওই দেহাংশ ভক্ষণ করতে দেওয়া হয়। অনেক সময় অক্ষত মৃতদেহও রেখে দেওয়া হয় এই পাখিদের খাদ্য হওয়ার জন্য।
বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে মৃতদেহকে খালি জাহাজ মনে করা হয় যা সংরক্ষনের কোনো দরকার নেই।মূলত, তিব্বতের কঠিন জলবায়ু ও পাথরে ভরা জমিতে কবর দেওয়া এক পক্ষে অসম্ভব।৫. সাসপেন্ড কবরস্থান (Suspended Burials) : এই সৎকার অনুষ্ঠানটি প্রাচীন চীন বংশের মধ্যে দেখা যায়। এখানে তারা মৃতদেহকে কফিনে পুড়ে উঁচু পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত শিলার উপর ঝুলিয়ে রেখে দেয়। সাধারণের বিশ্বাস, মৃতদেহকে আকাশের কাছাকাছি রাখা উচিত যাতে তারা বন্য প্রাণীদের নাগালের বাইরে এবং ভগবানের নাগালের মধ্যে বা কাছাকাছি থাকতে পারে।
৫. সতী :
উপযুক্ত কারণেই হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথার প্রচলন বর্তমানে নিষিদ্ধ। তবুও একটা সময়ে এই নিষ্ঠুর ও অমানবিক সৎকার হিন্দু ধর্মের এক সনাতনী ঐতিহ্য হিসাবেই মানা হত। এই রীতি অনুযায়ী, মৃত ব্যাক্তির স্ত্রী কে বধূবেশে সাজিয়ে একই চিতায় মৃত্যু বরণ করতে হত। সেই সময় দাবি করা হত, সতীদাহ প্রথার মাধ্যমে মৃত স্ত্রী সতিরূপে স্বর্গলাভ করবে।
৬. ভাইকিং ফিউনারেল (The Viking Funeral) :
এটি একটি অন্যতম নৃশংস সৎকার অনুষ্ঠান। এই রীতি অনুযায়ী মৃতদেহকে একটি অস্থায়ী কবরে দশ দিনের জন্য রাখা হত। পাশাপাশি চলত মৃতের জন্য নতুন জামাকাপড় তৈরির কাজ। অন্যদিকে একজন ক্রীতদাসীকে বেছে নেওয়া হত, যে ওই মৃত মানুষটির পরবর্তী জীবনের সঙ্গিনী হবে। এরপর সেই মেয়েটি ওই গ্রামের সকলের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতো। তাদের মতে এই বর্বরতায় নাকি ছিল মৃতব্যাক্তির প্রতি প্রেম নিবেদন। তারপর ওই দাসীর গলায় ফাঁস দিয়ে এবং সবশেষে ছুরি মেরে হত্যা করা হতো।
এরপর একটি কাঠের জাহাজে মৃত ব্যাক্তির সাথে তাকেও রেখে দিয়ে অগ্নি সংযোগ করা হত।
৭. আঙুলের আবৃততা (Ritual Finger Amputation) :
এই মৃতদেহ সৎকারের নিয়মটি পাপুয়া নিউ গিনির দানি জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত।
এই নিয়ম অনুযায়ী বাড়ির কোনো প্রিয় ব্যক্তি মারা গেলে তার সঙ্গে সম্বন্ধিত মহিলা ও শিশুরা তাদের আঙুলের কিছু অংশ কেটে ফেলত। এরপর কাদা ও ছাই মুখে মেখে মৃতব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশ করত।
৮. টোটেম পোলস (Mortuary Totem Poles) :
স্থানীয় সভ্যতার বিভিন্ন গল্প তুলে ধরার জন্য টোটেম পোল তৈরি করা হয়। হায়দা উপজাতির মধ্যে এই রীতি দেখতে পাওয়া যায়। এই রীতি অনুযায়ী মৃতব্যাক্তির শরীরকে পেটানো হবে যতক্ষন না এটি একটি ছোট বাক্সে এঁটে যায়।এরপর এই বাক্সটি একটি টোটেম পোল এর উপর রেখে মৃত ব্যাক্তির বাড়ির সামনে রেখে আসা হয়।
৯. বারিড ইন ফ্যান্টাসি কফিন (Buried in a fantasy Coffin) :
এই রীতি অনুযায়ী মৃতদেহকে এমন একটি কফিনে রাখা হয় যেটি তার জীবনকে অথবা পেশাকে উপস্থাপনা করে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিমান চালক কে বিমানরূপী কফিনে, কোনো জেলেকে মাছরূপী কফিনে আবার কোনো ধনী ব্যাবসায়ীকে একটি দামি গাড়ীরূপী কফিনে রাখা হয়।
১০. অন্ধ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (Blindfolded funeral) :
এই মৃতদেহ সৎকারের রীতি অনুযায়ী মৃতদেহের চোখ বেঁধে তাকে বাড়ির মুখ্য দরজার সামনে রেখে দেওয়া হয়। এটি দেখা যায় উত্তর পশ্চিম ফিলিপিনেসে।
এছাড়াও সারা পৃথিবী জুড়ে আরও নানান ধরনের অদ্ভুত এবং ভয়ংকর সৎকার অনুষ্ঠান দেখতে পাওয়া যায়।