Connect with us

রিভিউ

ইউ টিউব শর্ট ফিল্ম রিভিউ: প্রহেলিকা

Published

on

সৌমেন্দু বাগ : একটা গ্রাম। স্টেশন দিয়ে দিনে গোটা চারেক ট্রেন যায়। সেইরকম এক গ্রামেই অফিসের কাজে আসে পোস্ট অফিসের বড়বাবু। রাত হয়ে যায় আসতে। তাকে হেঁটে যেতে হবে অনেকটা পথ। কিন্তু এই নিতান্ত সহজ সরল এক গ্রামে কি এমন প্রহেলিকা লুকিয়ে আছে যে স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে গ্রামের ছেলে ছোকরা রাও সন্ধে নামার পর সেই পথ মাড়ায় না। বড়বাবু পারবেন কি সেই প্রহেলিকার জাল কাটতে, নাকি তিনিও জড়িয়ে পড়বেন নিয়তির অদৃশ্য খেলায়?

একদমই সহজ সরল একটা গল্প কে ইউ টিউবের পর্দায় ২০ মিনিটের শর্ট ফিল্ম রূপে নিয়ে এসেছেন দিগন্ত রায়। আনন্দ ব্যানার্জির গল্পের সবথেকে বড় দিক হলো গল্পের সারল্য। আট থেকে আশি প্রায় সবাই সমান ভাবে উপভোগ করতে পারবে , আজকের এই জটিল যুগের মানুষের জটিলতার দিকে আসক্তির জন্য হয়তো বেশিরভাগেরই গল্পটি পছন্দ হবে না। কিন্তু আমার মনে হয় মাঝে মাঝে এমন সারল্যেরও প্রয়োজন আছে জীবনে। খুব সহজ গল্পকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার একটা প্রধান অস্ত্র হচ্ছে ‘সাসপেন্স তৈরি করা’। ফিল্মে সেই কাজটি করার চেষ্টা প্রথম থেকে অবশ্যই ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে।

ফিল্মের একটা প্রাপ্তি ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক এবং ব্যবহৃত গান টি। হরর জনরার ছবিতে মিউজিক এর একটা বড় ভূমিকা থাকে, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেই মিউজিকের ব্যবহার। পরিচালকের এখানেই ছক্কা। এই দুটো জিনিসই খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহার করে সাসপেন্স তৈরির কাজটা করতে পেরেছেন। আর তার সঙ্গে আসে সিনেমাটোগ্রাফি। পরিচালক , সিনেমাটোগ্রাফার উভয়েই ছবি তোলার সাথে যুক্ত হওয়ায় এই একটি কাজে কোনো ত্রুটি হয়নি। পুরো ছবিটাই ন্যাচারাল লাইটে শুট হয়েছে , ফলে গ্রামের পরিবেশ টা যথাযথ ভাবে ফুটে উঠেছে। আর ছবির বেশিরভাগ অংশ রাত্রে শুট হওয়ায় আলোর ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়েছে। একটা ছোট্ট বাজেটের একটা শর্ট ফিল্মে প্রশংসনীয় সিনেমাটোগ্রাফি হয়েছে।

কন্টেন্ট ভিত্তিক শর্ট ফিল্মে অভিনয়ের জায়গা এমনিতেই কম থাকে। তবুও আনন্দ ব্যানার্জি, প্রীতম লাহিড়ি, তৃষা মন্ডলের অভিনয় সত্যিই ভালো লেগেছে। সুমন ব্যানার্জির অভিনয়ে ন্যাচারালিরটির একটু অভাববোধ দেখা গেছে আর দেবজিত ব্যানার্জির কণ্ঠস্বর আরেক সম্পদ ছবিটার।  ভালোবাসায় খারাপ ভালো সমস্ত উপাদান থাকে কিন্তু যেটা ধ্রুবক থাকে তা হলো হৃদয়। ভুল-ত্রুটি মিশিয়ে কিছু উদ্যোগী মানুষ এভাবেই তাদের ভালোবাসাকে বিলিয়ে দিতে চান মানুষের মধ্যে। কোনো প্রযোজক ছাড়াই, কোনো বিশাল পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই শুধুমাত্র উদ্যোগ আর বিশ্বাসকে সঙ্গী করে যে কাজ তারা সৃষ্টি করেছেন, তা যেন হারিয়ে না যায়। প্রত্যেক বটগাছ চারা থেকেই জন্মে। তাই চারা গাছ কে রক্ষা করা খুব জরুরি। তার বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাকে বাঁচিয়ে রাখাই আমাদের কাজ। ছবিটি সবাই দেখুন। সমালোচনা করুন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবিকে বাঁচিয়ে রাখুন।দেরি না করে দেখে নিন‘প্রহেলিকা’ 

রিভিউ

মন্ত্রমুগ্ধ সঙ্গীতের এই বান্দিশ। ওয়েব সিরিজ রিভিউ : বান্ডিশ বান্ডিত্স

Published

on

বিপাশা দাস : পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম জীব হলো গিয়ে মানব। শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকার গুণের ও অংশীদার তারা। সঙ্গীত যার মধ্যে একটি, লক্ষ্য করে দেখবেন নিত্যদিনের প্রত্যেকটি কর্মের মধ্যে আপনি সুরের আশ্চর্য মেলবন্ধন খুঁজে পাবেন। এই আশ্চর্য মেলবন্ধন কে কাজে লাগিয়ে পরিচালক অঙ্কিত তিওয়ারি বান্ডিশ বান্ডিত্স নামক একটি ওয়েব সিরিজ আমাজন প্রাইম এরপর্দায় নিয়ে এলেন।

গুরুর প্রতি শিষ্যের অপার ভক্তি, সঙ্গীতের প্রতি অনবদ্য প্রেম একজন নিষ্ঠাবান শিষ্যের পরিচয়। পুরাকালের কাহিনী তো সবার কাছে জ্ঞাত, গুরুদেব দ্রোণাচার্য একলব্য এর আঙ্গুল গুরুদক্ষিণা হিবেসে চেয়ে গুরুভক্তির নিদর্শন স্বরূপ অক্ষত রাখেন। তেমনি এই ছবিতে রাধে তার টাকুরদা পণ্ডিত রাধেমোহনকে নিজের গুরুভক্তি এবং প্রেমের নিদর্শন কঠোর পরিশ্রমের সাথে দিয়েছে।

এবার যদি সঙ্গীতের ব্যাখ্যা চান তাহলে বলবো যথাযথ তার কোনো ব্যাখ্যা হয় না। ইতিহাসের দিকে নজর দিলে বুঝতে পারবেন সঙ্গীতের মহিমা কতটা ব্যাপ্ত। আকবরের নবরত্ন অলংকৃত তানসেন নিজের সঙ্গীতেরদ্বারা বৃষ্টি নামাতে পারতেন, ক্ষিপ্ত হাতিকে শান্ত করার ক্ষমতা ও তার গানের দ্বারা ফুটে ওঠে। তবে এই ওয়েব সিরিজের শেষে এমনটাই পরিচয় পেয়ে থাকবেন। ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল গানের সঙ্গেপপ মিউজিক এর অসাধারণ যুগলবন্দি সত্যিই তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। সাথে রাজস্থানের সাংস্কৃতিক প্রতিপত্তি,রাজার উপস্থিতি সবকিছুই যেনো ইতিহাসকে চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট। আমাদের ভারতবর্ষে ফোক গানের কদর এক আলাদা স্তরেই বিদ্যমান, এত সুন্দর ভাবে তার পরিবেশন সাথে বিভিন্ন অসাধারণ কিছু রাগের উপস্থিতি ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের প্রেমে পড়ার জন্য যথেষ্ট।

অতুল কুলকর্ণী, নাসিরউদ্দিন সাহ, তৃধা চৌধুরী, শিবা চড্ডা দের মত নামকরা কিছু তারকাদের উপস্থিতি দেখা গেছে। সবার তাক লাগিয়ে দেওয়া অভিনয় এর পরিচয় আমরা আগেও পেয়েছি এই ওয়েব সিরিজেওবেশ সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কিন্তু ঋত্বিক ভৌমিক (রাধে) এবং শ্রেয়া চৌধুরী (তামান্না) র অসাধারণ অভিনয় সত্যিই প্রশংসনীয়। লিড রোল রাধের পুরো ওয়েব সিরিজ টিকে এক আলাদা জায়গায় স্থান দিয়েছে সাথে তার বন্ধু কবীরের কিছু হাস্যকর মুহূর্তও এবং অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষী এই সিরিজটি।

ডিরেকশনে র কথা বললে রাজেস্থানের যোধপুর নামক এই শহরটির সৌন্দর্য্য কে নব বধূর সাজের সাথে মিলিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে যা এককথায় অতুলনীয়। কিন্তু কোথাও গিয়ে কিছু খামতি চোখে ধরা পড়েই। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের প্রকাশ থাকলেও অত্যধিক পরিমাণে অকথ্য ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে যার ফলে পরিবারের সঙ্গে বসে দেখার কোনো সুযোগই নেই। সিরিজটির শেষের দিকে পপ এবং ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের ছোয়া তো দূর নায়িকার উপস্থিতিই সরিয়ে দেওয়া হয়। লেখার ক্ষেত্রে এসব খামতি এড়িয়ে যাওয়া দায়।

শ্রীরাম গণপথী র চলচ্চিত্রশিল্প সত্যিই খুবই সুন্দর ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এডিটিং এ লিড রোল রাধে র মাস্কড ম্যান এর থিওরী এবং তার উপস্থাপনা কে দুর্বল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষে মনমাতানো গানের যুগলবন্দী টি সত্যিই অবিস্মরণীয়। সেটা যদি নাই দেখলেন তাহলে কি দেখলেন প্রশ্ন করতে হয়। সঙ্গীত জগতের তিন অনবদ্য সৃষ্টিকর্তা কর্তা সংকর মহাদেভান, এহসান এবং লয়ের হাত ধরেই এই সিরিজের যে উত্থান। তাদের গাওয়া প্রত্যেকটি রাগের মধ্যে যে আলাদাই আবেগ, অনুভূতি,বেদনা,বিরহ,প্রেমের স্পর্ধা প্রকাশ পেয়েছে যা সত্যিই না শুনে বোঝা সাধ্যের বাইরে।

Continue Reading
Advertisement
Advertisement
Advertisement e

আমাদের ফেসবুকে পেজ লাইক করুন

Advertisement
Advertisement

জনপ্রিয় পোস্ট