রাজ্য
লক্ষ্মী চুরি করল তৃণমূল, বললেন বিজেপি সাংসদ।
নিজস্ব প্রতিনিধি : ‘দল পরিবর্তনের জন্য স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিশ’। না এটা কোনো সিনেমা নয়। তবে রাজ্য রাজনীতিতে এখন এই নাটকীয়তা চরমে।
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। সৌমিত্র বিজেপি সাংসদ এবং রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি। তাই সুজাতার দলত্যাগে রাজ্য রাজনীতিতে জলঘোলা শুরু হয়েছে।
সুজাতা বিজেপি ছাড়ার পর তাঁর কাছে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছেন সৌমিত্র। আবেগ ভরা গলায় তিনি বলেন, “তুমি ভালো থেকো। কিন্তু এতদিন তৃনমূলের বিরুদ্ধে কথা বলার পরে তুমি এই সিদ্ধান্ত নিলে যখন, তখন এটা তোমারই সিদ্ধান্ত। আমি হয়ত তোমাকে সময় দিতে পারি নি। হয়ত তোমার জন্য বিজেপিতে উপযুক্ত জায়গা করে দিতে পারি নি।”
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংসার ভাঙার অভিযোগ তুলে সৌমিত্র বলেন, “এক জ্যোতিষীর কথা শুনে ও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে , নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পুরণ করতে। আমি এখন মুক্ত। বিজেপির হয়ে প্রাণ দেব , আর পিছু টান রইল না।”
তৃণমূল ভবনে সোমবার সুজাতার হাতে পতাকা তুলে দেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। ছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। সুজাতা বলেন, “এখন প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে পারছি। একটা চ্যালেঞ্জ নিলাম। কোনও নিরাপত্তা ছাড়াই নিজের প্রাণ বাজি রেখে বিজেপির হয়ে অনেক লড়াই করেছি। কোনও সম্মান দেয়নি বিজেপি।”
স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেই কি তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে সুজাতা পাল্টা বলেছেন, “আগামী দিনে সৌমিত্রও যে তৃণমূলে যোগ দেবে না, তা কে বলতে পারে?’’
সৌমিত্র বলেছেন, ‘ঘরের লক্ষ্মীকে চুরি করে নিয়ে গেল তৃণমূল’। অন্যদিকে, সুজাতা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপির চাপেই কি ১০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ডিভোর্সের নোটিশ?
সেইসঙ্গে বললেন, “ওকে আমি ভালোবাসি, ওর দেওয়া শাঁখা, সিঁদুর পরে আছি, ছিলাম এবং থাকবো। এক দল ছেড়ে অন্য দলে যেতেই পারি। তাঁর জন্য স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যায় নাকি?”
সুজাতার কথায়, “দুজনে একসঙ্গে অনেক লড়াই, সংগ্রাম করেছি। সৌমিত্রকে বলছি, ভুল কোরো না। বিবাহিত জীবন ভেঙে দিও না। আমি সেদিনের মতই তোমার পাশে আছি , থাকব। তোমার যদি বিপদ হয় আমিই ছুটে গিয়ে রক্ত দেব, জীবন দেব। আজ যদি দলের জন্য ও স্ত্রীকে ছাড়তে পারে, তাহলে বিজেপির উচিত ওকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া।”
জবাবে সৌমিত্র বলেছেন, “স্বপ্নেও ভাবিনি, জীবনে এমন ঘটবে। বুঝতে পারিনি ও এভাবে চলে যাবে। সুজাতা তুমি ভালো থেকো।”
রাজনীতি রক্তক্ষরণ, বলিদান সবের কারণ। কিন্তু এবার রাজনীতির টানাপোড়েন ভেঙে গেল কারোর সংসার। তবে, সত্যিই কী তাদের ডির্ভোস হবে? নাকি দলের দিকে নজর কাড়ার আরেক ছক এটি?
রাজ্য
চিটফান্ড-কাণ্ডে এবার পিসি সরকার জুনিয়রের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি!
নিজস্ব প্রতিনিধি : শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা হাজির হলেন পিসি সরকার জুনিয়রের মুকুন্দপুরের বাড়িতে। তল্লাশি চালানোর জন্যেই তাদের ওই বাড়িতে যাওয়া। তবে কী কারণে এই তল্লাশি অভিযান, তা অবশ্য সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়নি। মুখে কুলুপ এটেছেন পিসি সরকারের পরিবারের সদস্যরাও।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চিটফান্ড-কাণ্ডের তদন্তে ৪টি জায়গায় তল্লাশি চলছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই ৪টি বাড়ির মধ্যে একটি হল জুনিয়র পিসি সরকারের বাড়ি।
একটি রেস্তরাঁ নিয়ে টাওয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে জুনিয়র পিসি সরকারের ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির সময় তিনি টাওয়ার গোষ্ঠী থেকে টাকাও নিয়েছিলেন। রেস্তরাঁ নিয়ে টাওয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে যে চুক্তি, তার বাইরে অন্য কোনও ভাবে টাকা লেনদেন হয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার মুকুন্দপুরের পূর্বালোকের বাড়িতে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। টাওয়ার গ্রুপের সঙ্গে কী ভাবে তার চুক্তি হয়েছিল, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।