কলমের আঁচড়ে
‘জেনে’ আর ‘মেমে’ মিল কোথায়?
মৃণাল কান্তি দাস : “Meme” শব্দটা শুনলেই কেমন যেন হাসি পাই, তাই না? শব্দটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকা নানান ছবি-ভিডিও। কোথাও একটা কফিন কাঁধে নিয়ে কালো টুপি-কোট পরা কয়েকটা মানুষ নাচানাচি করছে, ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে এমন এক মিউজিক, যা শুনলেই আপনি নিজেরই অজান্তে হেসে ফেলেন। বা কোনো অবলা এক সাদা বিড়াল ও এক মহিলার দৃষ্টি ভঙ্গির ফারাক। আবহাওয়ার মত প্রতি মুহূর্তে বদলে যায় ভাইরাল হওয়া মিম, যা বদলাই না তা হল এর হাস্যরস।
কিন্তু আপনার এক ঘেয়ামি জীবনে যে মিম এত আনন্দ সৃষ্টি করে তার কত টাই বা আপনার জানা? কী ভাবে এই মিম শুরু হল? প্রথম মিম কোনটা?…এমনই নানান প্রশ্ন মনে জাগে তাই না? এসব কিছু জানতে হলে প্রথমেই আমাদের দেখে নিতে হবে এই শব্দের উৎপত্তি। ইন্টারনেট এই শব্দকে বিশাল পরিচিতি দিলেও ইন্টারনেট আসার বেশ কিছু বছর আগেই এই শব্দের ব্যবহার শুরু হয়। এই ‘meme’ শব্দের উৎস হল গ্রিক শব্দ ‘mimema’, যার আক্ষরিক অর্থ হলো ‘imitated’, বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় “অনুসৃত”।
১৯৭৬ সালে প্রথম এই শব্দের ব্যবহার হয় ব্রিটিশ বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী (evolutionary biologist) Richard Dawkins এর “The Selfish Gene” নামক একটি বই-এ। কী ভাবছেন, একটা বায়োলজি বই-এ মিম এল কোথা থেকে? এই বইয়ের লেখক, অর্থাৎ R. Dawkins মিমকে একটা বিশেষ বায়োলজিক্যাল জিন হিসাবে কল্পনা করেন, যারা হল ‘Selfish’ মানে স্বার্থপর। মিম আবার স্বার্থপর! যে মিম মানুষকে এত হাসায় সে স্বার্থপর কি করে হবে! আসলে মিম হল এমন এক জিনি গোষ্ঠী যে নিজের থেকেই নিজের প্রতিলিপি গঠন করতে থাকে কারও অনুমতি ছাড়া এবং বংশপরম্পরায় এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চালিত হয়। এর আবার মিউটেশন ইভোলিউশন এসবও হয়ে থাকে। এই তথ্যটি থিওরিটিক্যাল এবং বেশ বিবাদত্তক।
এখনও পরিষ্কার হচ্ছে না তো? মিম আর জীনের সম্পর্ক কোথায়? প্রথম সম্পর্ক তো মিম নামেই। কখনও ভেবেছেন “meme” এর উচ্চারণ ‘মেমে’ না হয়ে ‘মিম’ হল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর আরেক প্রশ্ন দিয়ে দেওয়া যায় “gene” এর উচ্চারণ ‘জেনে’ না হয় ‘জিন’ হল কেন?
আর সেলফিশ জিনের মত আপনার মিমও কিন্তু সংখ্যায় বাড়তে থাকে কারণ আপনি নিজেকে আটকাতে পারেন না মিম শেয়ার করা থেকে, যেমন পারেন না সেলফিস জিনের রেপ্লিকেশন আটকাতে। মিমের কনসেপ্টটা এ ধরনেরই, সেটি স্বার্থপর, সে জানেনা তার সংখ্যা বৃদ্ধিতে তার মালিকের ক্ষতি হবে, না লাভ হবে কিন্তু সে জানে তার সংখ্যা বৃদ্ধি করার পদ্ধতি। খুব সংক্ষেপে বলতে গেলে Meme এর সাধারন কনসেপ্ট হলেও “cultural transmission”, যেখানে কিছু আইডিয়া বা চিন্তা-ধারা এক মাথা থেকে আরেক মাথায় সঞ্চালিত হয়। ‘সংক্ষিপ্তকরণ গুণগতমানের বারোটা বাজাতে পারে কিন্তু’।
কি ভাবছেন ‘আনন্দদায়ক’ মিমির কনসেপ্ট এত ‘ভয়ানক’? ‘হাসির’ মিম এত ‘সিরিয়াস’ ? চলুন অনেক সিরিয়াস আলোচনা হল, বায়োলজি-ইভোলিউশন-জিন-মিউটেশন; মিম শেয়ার করতে এসব জানার দরকার পরেনা। এবার ছোট্ট করে ইতিহাস তা দেখে নেওয়া যাক। যদি আপনি ভেবে থাকেন ইন্টারনেট আছে বলেই মিম আছে তাহলে কিন্তু ভুল ভাবছেন।
এই যে ‘হাসির মিম’ তার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায প্রায় ৭৬ খ্রিস্টাব্দে ‘Pompeii’ শহরের কোন এক দেওয়াল চিত্রে (graffiti)। ‘The Sator Square’ নামক পাঁচ শব্দের সেই বিখ্যাত প্যালিনড্রোম, (palindrome – অর্থাৎ উপর-নিচ-ডান-বাম যেদিক থেকেই পড়ুন তার কোন পরিবর্তন হয় না) যেটি মিমের সম্ভবত সবথেকে প্রাচীন নিদর্শন। সেই বিখ্যাত ল্যাটিনলেখা টি হল “SATOR AREPO TENET OPERA ROTAS”, অবশ্য কি কারণে এর সৃষ্টি তা এখনও রহস্য। বিশ্বের বহু প্রান্তে এমনই “প্রাচীন মিম”-এর নিদর্শন পাওয়া যায়।
ইন্টারনেট আসার পরেও মিম বর্তমান রূপ পায়নি। প্রথমদিকে এখনকার মতো এত বেশি শেয়ার হতো না, সীমিত কিছু ইমেইল আর মেসেজ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এই মিম।
ইন্টারনেটে প্রথম বিখ্যাত মিম বলে চলে ১৯৯৬ -এক কালো ব্যাকগ্রাউন্ড এর সামনে একটি ছোট প্যান্ট পরা বাচ্চার নাচতে থাকার এক GIF (graphic interchange format) যা সেই সময় বেশ ‘ভাইরাল’ হয়েছিল। এরপরের বিখ্যাত মিম ছিল ১৯৯৮ সালের ‘The Hampster Dance’ যেখানে দেখা যায় কিছু গিনিপিগ ‘Whistle Stop’ গানের তালে। এর পর মিম শেয়ার হওয়া কেউ আটকাতে পারেনি। সময়ের সাথে পাঙ্গা দিয়ে বাড়তে থাকে তাদের সংখ্যা।
এরপর থেকে ভাইরাল হওয়া মিমের নাম বা সংখ্যা বলতে গেলে হয়তো তার শেষ করা সম্ভব নয়। মিমের যথেষ্ট খামখেয়ালিপনা আছে, কোন সময় কিভাবে কোন মিম ভাইরাল হয়ে যেতে পারে তা কিন্তু ‘নিউটনের সূত্র’ তেও বলা নেই। আবহাওয়ার মত যে কোন মুহূর্তে বদলে যেতে পারে এক মিমের ভবিষ্যৎ, হয়ে যেতে পারে ‘ভাইরাল’।
কিন্তু এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বা সন্দেহের অবকাশও নেই যে মিম শুধু লোককে আনন্দ দেওয়ার একটি মাধ্যম হয়ে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখেনি। হাসি-ঠাট্টার গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসে আজকের প্রতিবাদের একটি মাধ্যম-একটি ভাষা হিসেবেও নিজেকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। একসময় কার্টুন চিত্র যা করত তার অনেকটা করার ক্ষমতা কিন্তু মিম অর্জন করেছে। অস্ত্র ছাড়াও হাসির ছলে প্রতিবাদ সম্ভব তা আবারও প্রমাণ করেছে MEME।
কলমের আঁচড়ে
পৃথিবীর বুকে মেনে চলা কিছু বিস্ময়কর এবং ভয়ঙ্কর সত্কার-রীতি!
বিশ্বজিৎ দাস : কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বলে গেছেন “জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে?” অর্থাৎ জন্মগ্রহণ করলে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য। মানুষের মৃত্যুর পর সৎকার করা হয়। সভ্যতার প্রথম দিক থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। এই সৎকারের সময় টা খুবই কঠিন, বিশেষত নিকটজনের কাছে। সে সব আঁকড়ে থাকে, কারণ একবার ছেড়ে দিলে আর পাওয়া যাবে না। এই ভাবাবেগ থেকেই স্মৃতি রক্ষার ভাবনা শুরু। মৃতের ব্যবহৃত জিনিস রেখে দেওয়া, যেমন চুল কিছুটা কেটে যত্ন করে রেখে দেওয়া ছিল পুরনো প্রথা। অনেকে দাঁত সংরক্ষন করত। বুদ্ধের দাঁত কলকাতার জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে আজও।
কিন্তু পৃথিবীর প্রত্যেক জাতির মধ্যেই মৃত্যুর পর কিছু বিশেষ নিয়ম পালন করার রীতি আছে। কিছু নিয়ম বিজ্ঞানসম্মত আবার কিছু একেবারে অদ্ভুত। মৃতদেহ সত্কারের জন্য কেউ যেখানে মৃতদেহটি পুড়িয়ে ফেলেন, আবার কেউ বা মাটিতে কবর দেন। আবার কেউ বা সযত্নে সেটিকে কফিনজাত করেন। কিন্তু এসবের বাইরেও এমন অনেক রীতিনীতি আছে যেগুলি আমার আপনার স্বাভাবিক ভাবনা চিন্তার বাইরে।
সাধারণ মানুষের কাছে মৃত ব্যক্তিকে মাটিতে কবর দিয়ে রাখা বা আগ্নিদাহ করা পরিবেশগত কারণে মোটামুটি স্বাভাবিক মনে হলেও কিছু কিছু সংস্কৃতিতে মৃত ব্যক্তি সমাহিত করার পদ্ধতি অবাক করার মতো।
পৃথিবী জুড়ে চলা এই আশ্চর্য ও কিছুটা ভয়ঙ্কর মৃত্যু অনুষ্ঠান গুলি হল :
১. মমিফিকেশন :
এই ঘটনা আমার আপনার কিছুটা জানা। প্রাচীন মিশরের ফারাওদের মরদেহ মমি করে সমাহিত করা হতো। এই পদ্ধতিতে প্রথমে দেহের অভ্যন্তরীণ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করা হয়। এরপরে দেহের সব আর্দ্রতা অপসারিত করা হয়। শেষে লম্বা আকৃতির লিনেন কাপড় দিয়ে দেহ মুড়ে ফেলা হয়।
তবে আধুনিক মমিফিকেশন পদ্ধতি আলাদা।বর্তমানে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য কিছু রাসায়নিক তরল ভর্তি পাত্রে দেহ ডুবিয়ে রাখা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এটি মৃতদেহ সৎকারের কোনো রীতি নয়; এটি মৃতদেহ সংরক্ষণ পদ্ধতি।
২. মৃতের পুনর্জাগরণ :
এই অদ্ভুত প্রথাটি পালন করা হয় মাদাগাস্কায়। প্রতি পাঁচ থেকে সাত বছর পর পর। তার নিকটাত্মীয়রা কবর খুঁড়ে মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষ বের করে আনে। এরপর মৃত ব্যক্তিকে নতুন পোশাক পরানো হয় এবং পারিবারিক ভোজে তাকে বসিয়ে রাখা হয়।এদিন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে গানের তালে তালে নাচতেও দেখা যায়। পারিবারিক পুনর্মিলন হিসেবে প্রথাটিকে দেখা হয়।
৩. এন্ডোক্যানিবালিজম (Endocannibalism) :
এই বিশেষ মৃত্যু অনুষ্ঠানটি দেখতে পাওয়া যায় আমাজন রেইন ফরেস্টের ইয়ানোমমি উপজাতি, পাপুয়া নিউ গিনির মেলানসিয়ানস উপজাতি এবং ব্রাজিলের ওয়ারীরা উপজাতির মধ্যে।এখানে একটি মৃতদেহকে বা দেহাংশকে ভক্ষণ করা হয়। তাদের বিশ্বাস এই প্রথার মধ্যে দিয়ে মৃত ব্যাক্তির আত্মা স্বর্গে যাবে।
এই জাতির মানুষেরা বিশ্বাস করেন, মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। উপরন্তু তারা ভাবেন যে, তাদের প্রতিদ্বন্দী গোষ্ঠী কোনো অশুভ আত্মাকে প্রেরণ করেছে। সেই কারণে এই ঘটনা রোধ করার জন্য তারা এই অনুষ্ঠানটি করে থাকেন। যাতে মৃত ব্যাক্তির আত্মা জীবিত থাকে এবং তার পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারে।
এই অনুষ্ঠানটি করার জন্য প্রথমে তারা মৃতদেহটিকে পাতা দিয়ে মুড়ে বাড়ি (যেখানে তিনি মারা গেছেন) থেকে অল্প দূরে জঙ্গলে রেখে আসেন। এর পর মোটামুটি ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মাথায় সেই পঁচাগলে যাওয়া মৃতদেহ থেকে হাড় সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। এরপর কলা দিয়ে বানানো একধরণের সুপের মধ্যে মৃতদেহের ছাই মিশিয়ে গোষ্ঠীর সকলে সেটি পান করে। তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র গোষ্ঠীর শিশু ও মহিলারা পালন করেন।
৪. তিব্বত বৌদ্ধ মহিমা কবর/ তিব্বতের আকাশ সৎকার (Tibetan Buddhist Celestial Burials or Sky burial) :
এই সৎকার অনুষ্ঠানটি তিব্বতি ঐতিহ্যের প্রতীক। এই অনুষ্ঠানে মৃতদেহকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে পাহাড়ের মাথায় রেখে আসা হয় এবং পাখিদের (বিশেষত শিকারী পাখিদের) ওই দেহাংশ ভক্ষণ করতে দেওয়া হয়। অনেক সময় অক্ষত মৃতদেহও রেখে দেওয়া হয় এই পাখিদের খাদ্য হওয়ার জন্য।
বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে মৃতদেহকে খালি জাহাজ মনে করা হয় যা সংরক্ষনের কোনো দরকার নেই।মূলত, তিব্বতের কঠিন জলবায়ু ও পাথরে ভরা জমিতে কবর দেওয়া এক পক্ষে অসম্ভব।৫. সাসপেন্ড কবরস্থান (Suspended Burials) : এই সৎকার অনুষ্ঠানটি প্রাচীন চীন বংশের মধ্যে দেখা যায়। এখানে তারা মৃতদেহকে কফিনে পুড়ে উঁচু পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত শিলার উপর ঝুলিয়ে রেখে দেয়। সাধারণের বিশ্বাস, মৃতদেহকে আকাশের কাছাকাছি রাখা উচিত যাতে তারা বন্য প্রাণীদের নাগালের বাইরে এবং ভগবানের নাগালের মধ্যে বা কাছাকাছি থাকতে পারে।
৫. সতী :
উপযুক্ত কারণেই হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথার প্রচলন বর্তমানে নিষিদ্ধ। তবুও একটা সময়ে এই নিষ্ঠুর ও অমানবিক সৎকার হিন্দু ধর্মের এক সনাতনী ঐতিহ্য হিসাবেই মানা হত। এই রীতি অনুযায়ী, মৃত ব্যাক্তির স্ত্রী কে বধূবেশে সাজিয়ে একই চিতায় মৃত্যু বরণ করতে হত। সেই সময় দাবি করা হত, সতীদাহ প্রথার মাধ্যমে মৃত স্ত্রী সতিরূপে স্বর্গলাভ করবে।
৬. ভাইকিং ফিউনারেল (The Viking Funeral) :
এটি একটি অন্যতম নৃশংস সৎকার অনুষ্ঠান। এই রীতি অনুযায়ী মৃতদেহকে একটি অস্থায়ী কবরে দশ দিনের জন্য রাখা হত। পাশাপাশি চলত মৃতের জন্য নতুন জামাকাপড় তৈরির কাজ। অন্যদিকে একজন ক্রীতদাসীকে বেছে নেওয়া হত, যে ওই মৃত মানুষটির পরবর্তী জীবনের সঙ্গিনী হবে। এরপর সেই মেয়েটি ওই গ্রামের সকলের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতো। তাদের মতে এই বর্বরতায় নাকি ছিল মৃতব্যাক্তির প্রতি প্রেম নিবেদন। তারপর ওই দাসীর গলায় ফাঁস দিয়ে এবং সবশেষে ছুরি মেরে হত্যা করা হতো।
এরপর একটি কাঠের জাহাজে মৃত ব্যাক্তির সাথে তাকেও রেখে দিয়ে অগ্নি সংযোগ করা হত।
৭. আঙুলের আবৃততা (Ritual Finger Amputation) :
এই মৃতদেহ সৎকারের নিয়মটি পাপুয়া নিউ গিনির দানি জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত।
এই নিয়ম অনুযায়ী বাড়ির কোনো প্রিয় ব্যক্তি মারা গেলে তার সঙ্গে সম্বন্ধিত মহিলা ও শিশুরা তাদের আঙুলের কিছু অংশ কেটে ফেলত। এরপর কাদা ও ছাই মুখে মেখে মৃতব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশ করত।
৮. টোটেম পোলস (Mortuary Totem Poles) :
স্থানীয় সভ্যতার বিভিন্ন গল্প তুলে ধরার জন্য টোটেম পোল তৈরি করা হয়। হায়দা উপজাতির মধ্যে এই রীতি দেখতে পাওয়া যায়। এই রীতি অনুযায়ী মৃতব্যাক্তির শরীরকে পেটানো হবে যতক্ষন না এটি একটি ছোট বাক্সে এঁটে যায়।এরপর এই বাক্সটি একটি টোটেম পোল এর উপর রেখে মৃত ব্যাক্তির বাড়ির সামনে রেখে আসা হয়।
৯. বারিড ইন ফ্যান্টাসি কফিন (Buried in a fantasy Coffin) :
এই রীতি অনুযায়ী মৃতদেহকে এমন একটি কফিনে রাখা হয় যেটি তার জীবনকে অথবা পেশাকে উপস্থাপনা করে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিমান চালক কে বিমানরূপী কফিনে, কোনো জেলেকে মাছরূপী কফিনে আবার কোনো ধনী ব্যাবসায়ীকে একটি দামি গাড়ীরূপী কফিনে রাখা হয়।
১০. অন্ধ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (Blindfolded funeral) :
এই মৃতদেহ সৎকারের রীতি অনুযায়ী মৃতদেহের চোখ বেঁধে তাকে বাড়ির মুখ্য দরজার সামনে রেখে দেওয়া হয়। এটি দেখা যায় উত্তর পশ্চিম ফিলিপিনেসে।
এছাড়াও সারা পৃথিবী জুড়ে আরও নানান ধরনের অদ্ভুত এবং ভয়ংকর সৎকার অনুষ্ঠান দেখতে পাওয়া যায়।